চৌগাছার পশুহাট বন্ধ আইনি জটিলতায়

0

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছার একমাত্র পশুহাট আইনি জটিলতায় প্রায় দুইমাস বন্ধ রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পশুহাট বন্ধ থাকায় যেমন ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে, তেমনি হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ এর সাথে সম্পৃক্ত শ শ মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সকল আইনি জটিলতা কাটিয়ে হাট দ্রুত বসবে, ফিরে আসবে সেই প্রাণ চাঞ্চল্যতা এমনটিই মনে করছেন এলাকাবাসী।
ঐতিহ্যবাহী পশুহাট এ জনপদের মানুষের হৃদয়ের সাথে মিশে আছে। জায়গা সংকটের কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া পশুহাট বলা চলে বর্তমান পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেলের প্রচেষ্টায় পুনরায় ফিরে আসে। পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কংশারীপুর মহল্লায় অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে শুরু হয় পশু কেনাবেচা। অল্প দিনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠায় হাট ধ্বংসের নোংরা খেলায় মেতে উঠে পাশ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলার কতিপয় সুবধাভোগী ব্যক্তি। তাদের দায়ের করা মামলায় আদালত চৌগাছার পশুহাট বন্ধের নির্দেশ দেয়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ হাট বন্ধ করে দেয়। হাট বন্ধের পর প্রায় দুই মাস পার হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ এই সময় হাট বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন পশুহাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা নানা ধরনের ব্যবসায়ী ও হাটের সাথে সম্পৃক্তরা।
বুধবার ছিলো সাপ্তাহিক পশুহাটের দিন, দুপুরে হাট এলাকায় দেখা যায় সর্বত্র খা খা করছে। কষ্টে দিন পার করছেন হাটের সাথে জড়িত ও স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। পশুহাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা চা বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম, শওকত আলী, আমিনুর রহমান জানান, পশুহাট ছিলো আমাদের জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। কিন্তু হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম কষ্টে আছি। হোটেল ব্যবসায়ী রাজু আহমেদ, পিকুল হোসেন, সাজ্জাত আলী বলেন, সপ্তাহে দুইদিন যা বেচাকেনা হতো তাতেই চলতো সংসার। এখন হাট বন্ধ। হোটেলও বন্ধ। ছেলে -মেয়ে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। মুদি ব্যবসায়ী আকিকুল ইসলাম, আবির হোসেন, জিয়াউর রহমান বলেন, হাটের দিনে ব্যাপক জনসমাগম হতো বেচাকেনাও ভালো হতো। হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেনাবেচা শূন্যে নেমে এসেছে। হাটে কাজ করা আবু সাঈদ, সম্রাট দাস, তপন দাস বলেন, হাটের দিন ডিউটি করে যা আয় হতো তাতে চলতো সংসার। প্রায় দুই মাস হাট বন্ধ। পরিবার নিয়ে অনেক কষ্টে চলছে দিন।
সূত্র জানায়, পাশ্ববর্তী ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় অন্তত ৫টি পশুহাট রয়েছে। পক্ষান্তরে যশোরের চৌগাছা উপজেলাতে মাত্র একটি পশুহাট। চৌগাছার পশুহাট বসার দিনের সাথে মহেশপুর উপজেলার একটি পশুহাটের দিন মিলে যাওয়ায় সেখানকার কতিপয় সুবিধাভোগী ব্যক্তি আদালতে মামলা করেন, যার ফলে চৌগাছার পশুহাট বন্ধ হয়ে যায়।। চৌগাছায় যেহেতু একটি মাত্র পশুহাট তাই এখানকার মানুষের সুবিধা মত দিন- তারিখে হাট পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সদয় হবেন বলে মনে করছেন উপজেলার সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ড.এম মোস্তানিছুর রহমান বলেন, চৌগাছা পশুহাট এ জনপদের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। একটি মহল হাট ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। তবে আমি আশাবাদী মাহামান্য আদালত পুনরায় পশুহাট বসার অনুমতি দেবেন।।