যশোর শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ এর ছড়াছড়ি পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবে না অনেকে

0

 

আকরামুজ্জামান ॥ যশোর শিক্ষা বোর্ডের এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর তুলনায় ভাল কলেজের আসন সংখ্যা কম। ফলে, অে নক মেধাবী শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না। এ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক ও অভিভাবকরা এসএসসি পরীক্ষায় এ বছর যশোর বোর্ডে পাসের হার ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। যা দেশের সবকটি বোর্ডের শীর্ষে রয়েছে। পাসের হারের পাশাপাশি জিপিএ-৫ অর্জনেও এই বোর্ড সাফল্য দেখিছেন, এবার ৩০ হাজার ৮৯২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে এতো মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্যে ভাল কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত আসন নেই। ফলে, দুশ্চিন্তায় ফেলেছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানা গেছে, এ বছরও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করা হবে ফলাফলের ভিত্তিতেই। এজন্যে কোনো পরীক্ষা হবে না। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা অলনাইনে নীতিমালা অনুযায়ী যথাক্রমে ৫ ও সর্বোচ্চ ১০ টি কলেজ বা সমমানের প্রতিষ্ঠানের জন্যে আবেদন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থী যত কলেজে আবেদন করবে, সেগুলোর মধ্য থেকে মেধা, কোটা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটিমাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আহসান হাবীব বলেন, এসএসসির রেজাল্ট প্রকাশের পর এখন আমরা একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছি। এজন্য আগামী ১ ডিসেম্বর ভর্তি নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সভা আহবান করা হয়েছে। এ বছর ভর্তির ক্ষেত্রে নীতিমালার কোনো পরিবর্তন আসবে কী-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভায় কী সিদ্ধান্ত হয় তা পরে জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলের তালিকায় সাতক্ষীরা জেলা প্রথমে রয়েছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে যশোর জেলা। এ জেলা থেকে ৯৫ দশমিক ৭৭ ভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। জিপিএ-৫ এর পুরো সংখ্যা না জানা গেলেও শহরের নামী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সেখান থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে, এসব শিক্ষার্থী আদৌ তাদের পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবে কীনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শোয়াইব হোসেন বলেন, তার স্কুল থেকে এ বছর ২৪৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সকলেই পাশ করেছে। এর মধ্যে ১৯৪ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২৬৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২২৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে বলে জানান স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষক আহসান হাবীব। এসব শিক্ষার্থীরা সবাই ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার আশা করছে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত যশোর জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে সকল শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করে, তাদের এইচএসসিতে ভালো কলেজ পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সবার টার্গেট থাকে যশোর সরকারি এমএম কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, দাউদ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সিটি কলেজের দিকে। তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব কলেজের আসন সংখ্যা সীমিত। এ বিষয়ে যশোর সরকারি এমএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সেখানে ৭৩০টি আসন রয়েছে। এরমধ্যে বিজ্ঞান শাখায় ৩৬০টি, মানবিক শাখায় ১৮৫টি ও বাণিজ্যে বিভাগে ১৮৫টি। তিনি বলেন, ভর্তির ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক পরীক্ষার্থীরা আছে যারা জিপিএ-৫ পায়নি, কিন্তু টোটাল নম্বর অনেক বেশি, এসব শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে। একই কথা বলেন, যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অমল কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, আমার কলেজে মোট আসন সংখ্যা ৭৩০টি। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২৪০, মানবিক বিভাগে ৩২০ ও বাণিজ্য বিভাগে ১৭০টি। মেয়েরা যেহেতু এ বছর ভালো ফলাফল করেছে সে কারণে এই কলেজে ভর্তির আবেদন বেশি হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। অভিভাবকদের দাবি, মেধাবী শিক্ষার্থীরা যারা তারা যেনো ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারে সে জন্যে আসন সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়া হোক। এ বিষয়ে যশোর সরকারি শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে সদ্য পাস করা শিক্ষার্থী মীর রফিকুজ্জামান অর্পণ জানায়, জীবনের একটি লক্ষ্য উদ্দেশ্য নিয়ে লেখাপড়া করছি। সে লক্ষ্যেই এবার ভালো ফল করেছে। এখন আকাক্সক্ষা একটা ভালো কলেজে চান্স পাওয়া। আশা করি, আল্লাহ সেই ইচ্ছা পূরণ করবে।