প্রধানমন্ত্রীর কাছে যশোর উন্নয়নের প্রস্তাবনা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরে আসছেন। এদিন তিনি যশোর শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর পর তিনি যশোরে আসছেন। এই সফরে যশোরবাসীর জন্যে কি কোনো সুখবর আছে কিনা বা তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেবেন কিনা তা নিয়ে কোনো মহলই এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলছেন না। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন উন্নয়নের দাবির বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, আগামী ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আমরা দলীয়ভাবে যশোরের উন্নয়নে কি কি দাবি তুলবো তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। এ বিষয়ে যশোরের সকল এমপি ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে বসে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তৈরি করে তা তুলে ধরা হবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যশোরে যতবার এসেছেন ততবারই যশোরবাসীকে কোনো না কোনো সুখবর দিয়ে গেছেন। এ বছরও তিনি যশোরবাসীকে বিমুখ করবেন না।
বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন যশোরের আসছেন তখন দেশের মনুষের জনজীবনে চরম সংকট চলছে। দুর্নীতি, অনিয়ম, অপশাসনের পাশাপাশি দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্ধ্বগতির কারণে মানুষ চরম কষ্টে জীবনযাপন করছে। এজন্যে তার কাছে শুধুমাত্র অবকাঠামো উন্নয়নের প্রাপ্তির বিষয়টি জরুরি নয়। জনজীবনে যে চরম দুর্বিসহ পরিস্থিতি চলছে এ পরিস্থিতি উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসা উচিৎ।
তিনি বলেন, যশোরসহ এ অঞ্চলে প্রধানমন্ত্রী গৃহিত যে মেগাপ্রকল্প চলমান রয়েছে, যেমন ভৈরব-কপোতাক্ষ খননেন বড় ধরণের দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের ডিজাইন অনুযায়ী খনন না করে প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। এর বাইরেও সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে। ‘ভবদহ জনপদের প্রায় ২০০ গ্রামের প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষভাবে ১০ লাখ মানুষ একটি কুচক্রি সিন্ডিকেটের লুটপাট ও লালসার শিকার। পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ঠিকাদার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত ও ঘের মালিকরা সিন্ডিকেট গড়ে তুলে প্রতি বছর জনগণকে জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা লুটের স্থায়ী ব্যবস্থা করে নিয়েছে। এসব দুর্নীতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের বার্তা আসা উচিৎ জনসভা থেকে।
ন্যাপের কেন্দ্রীয় নেতা যশোরের প্রবীণ রাজনীতিক এনামুল হক বলেন, দীর্ঘদিন পর যেহেতু প্রধানমন্ত্রী যশোরে আসছেন সেজন্যে অবশ্যই যশোরের কিছু দাবি দাওয়া থাকা উচিৎ। আশা করি দাবিগুলো চিহ্নিত করে তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, আমার প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রী যশোরকে বিভাগ ঘোষণা করবেন। এটি করলে অটোমেটিক অনেক উন্নয়নমূলক কাজ চলে আসবে। এর বাইরে যশোর যেহেতু কৃষির জন্য উল্লেখযোগ্য এজন্যে এ জেলায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করা, যশোর বিমান বন্দরে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে রূপ দেয়া ও একটি বিশেষায়িত সবজি হিমাগার প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি তুলে ধরা উচিৎ।
তিনি বলেন, দেশে যেহেতু অর্থনৈতিক চরম মন্দা চলছে এজন্যে মানুষ যাতে খাদ্য সংকটে না পড়ে, দুর্ভিক্ষ আসতে না পারে সেজন্যে স্বাস্থ্যখাতসহ বিভিন্ন খাতে যে দুর্নীতি আছে তা প্রতিরোধের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাবনা দেবেন বলে আশা করছি।
জাসদের কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলম বলেন, প্রধামন্ত্রী যেহেতু দীর্ঘদিন পর যশোরে আসছেন সে কারণে তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা এ অঞ্চলে যে অর্থনৈতিক অঞ্চল করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা দ্রুত ত্বরান্বিত করা। এ জেলায় দ্রুত গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা, যশোর যেহেতু ফুল রফতানির জন্যে উল্লেখযোগ্য সে কারণে যশোরে ফুল রফতানি অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ফুল চাষকে রফতানিমুখি করার বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এবং দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের জন্যে কমমূল্যে স্থায়ীভাবে রেশনিং পদ্ধতি চালু করা। এর বাইরেও যশোরে যেসব মেগাপ্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তার দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ঘোষণা দাবি করেন তিনি।