বাগেরহাটে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বাড়ি ও ফসলি জমি

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটে নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণে করেছে। প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি, পাকা সড়কসহ নানা স্থাপনা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কালভার্ড ব্রিজ। বাপ দাদার ভিটেবাড়ি হারিয়ে নি:স্ব পরিবারগুলো ভাঙ্গনরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মানের দাবি জানিয়েছেন। পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে সব ভাঙন এলাকায় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী । সরেজমিনে দেখা যায়, রামপাল উপজেলা সদরের রামপাল নদীর ভাঙ্গনে ওড়াবুনিয়া থেকে বগুড়া ব্রিজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক ও সড়কের পাশে প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের যাতায়াতের পথ না থাকায় ফসলি জমি ও অন্যের বাড়ির মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়া ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে রামপাল উপজেলা ডিগ্রি কলেজ, কৃষি অফিস, কালভার্ট, ব্রিজ ও খেলার মাঠ। অপরদিকে মোংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেলের রামপাল উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এলজিইডি নির্মিত সড়কের পাশের দুটি গ্রামের অসংখ্য ঘর বাড়ি ও ফসলি জমি, গাছপালাসহ নানা স্থাপনা নদী গর্ভে চলে গেছে। স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙতে ভাঙতে দুই গ্রামের অনেক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর সরে যাওয়ার জায়গা নেই। বৃষ্টির মৌসুম আসলেই গরু-বাছুর, গাছপালাসহ সম্পদ নিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। এই দুই গ্রামের মানুষ ও তাদের জানমাল রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ দেয়া প্রয়োজন। ভাঙনে তিন বার ঘর হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওড়াবুনিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ। তিনি বলেন, কয়েক বছরে তিনবার ঘর সরানো লেগেছে। আর ভাঙলে পরিবার নিয়ে ভাসা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। মনোয়ারা বেগম নামের এক নারী বলেন, নদীর পাড়ে আমরা থাকি। বৃষ্টি-জোয়ারে পানি উঠে সব তলিয়ে যায়। জোয়ারের পানি দুইবারই ওঠে। রান্নার চুলাও ডুবে যায়। আমরা খুব সমস্যায় আছি। সরকারের কাছে চাই এইজাগায় যেন স্থায়ী বাঁধ দিয়ে দেয়। স্থানীয় শাহিদা আক্তার বলেন, রাস্তা ভেঙে নদীতে চলে যাওয়ায় ছেলে-মেয়েরা ঠিকমত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। আমাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। কোনো রকমে বেঁচে আছি। ভাঙনের সময় যে দশ কেজি চাল দেয়, তা আমরা চাইনা। আমাদের স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিন। রামপাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, রামপাল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের আমরা উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে থাকি। এছাড়া ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, যেসব এলাকায় ভাঙন বেশি সেসব এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মানের জন্যে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ।বাগেরহাট জেলার ৬ টি উপজেলা ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকাবাসী।