বাজারে আগের দামেই সয়াবিন তেল কমেনি ১৪ টাকা

0

 

আকরামুজ্জামান ॥ বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি ১৪ টাকা কমানো হয়েছে। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে এখনও মিলছেনা কোন সুফল। মঙ্গলবার থেকে নতুন দামে সয়াবিন তেল বিক্রির নির্দেশনা থাকলেও যশোরের বাজারগুলোতে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি থেকে নতুন রেটের বোতলজাত সয়াবিন তেল না আসা পর্যন্ত আগের দামেই বিক্রি করা হবে।
সোমবার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৮ টাকা। আগের দাম ছিল ১৯২ টাকা। সয়াবিন তেলে নতুন দর  মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে যশোর শহরের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বেঁধে দেয়া দামে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি না হয়ে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগের দামে কেনা বোতলজাত সয়াবিন তারা পূর্ব নির্ধারিত দামেই বিক্রি করছেন। দাম কমানো সয়াবিন বাজারে আসলেই নতুন দামে তারা বিক্রি করবেন। কিন্তু কবে থেকে তা হবে তা তারা বলতে পারছেন না।
মঙ্গলবার বিকেলে যশোর শহরের বড়বাজারের গোহাটা রোডের গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি দোকানে অল্প সংখ্যক বোতলজাত সয়াবিন তেল রয়েছে। তবে তারা পূর্বের নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুযায়ীই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। কথা হয় বাজারের রাজ স্টোরের বিক্রয় প্রতিনিধি শাওনের সাথে। তিনি বলেন, আমরা কোম্পানি থেকে আগের রেটে যে বোতলজাত সয়াবিন তুলে এনেছি সেগুলো আগের দামে বিক্রি করছি। নতুন রেটের সয়াবিন তেল না আসা পর্যন্ত এ দামেই বিক্রি করতে হবে।
পাশেই কথা হয় যশোর মসলা ঘরের স্বত্বাধিকারী নির্মল পালের সাথে। তিনি বলেন, আমার দোকানে রুপচাঁদা প্রতি ৫ লিটার ৯৩০ টাকা, বসুন্ধরা ৯২০ টাকা, পুষ্টি ও ফ্রেশ তেল ৯০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। নতুন দামের কোনো সয়াবিন তেল এখনও বাজারে না ঢোকায় পূর্বের দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা খুব সমস্যায় রয়েছি সরকার হুটহাট করে পণ্যের দাম বাড়ানো-কমানোর কারণে ভোক্তাদের সাথে ভুল বোঝাবুঝি চলেই থাকে।
প্রায় একই কথা বলেন বড়বাজারের রবি স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, আমার দোকানে প্রচুর পরিমাণ পূর্বের দামের সয়াবিন তেল রয়েছে। এগুলো শেষ হওয়ার পর নতুন দামের বোতলজাত সয়াবিন তেল বাজারে আসলে তা বিক্রি করবো। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা যে দামে তেল কিনে এনেছি এখন সেই দামেই বিক্রি করছি। বডিরেটের বাইরে তেল বিক্রি করলে আমাদের পুঁজি থাকবেনা।
এদিকে সয়াবিন তেলের দাম কমানোর পরও বাড়তি দামে বিক্রি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন , সরকার সয়াবিন তেলের দাম যখন বাড়িয়ে দেয় তখন ব্যবসায়ীরা আগের দামে বিক্রি না করে বাড়তি দামে বিক্রি করে সুবিধা নিলে এক্ষেত্রে হবেনা কেনো।
মঙ্গলবার যশোর বড়বাজারে কথা হয় শাহিনুর রহমান নামে এক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন, পণ্যের দাম কমানো ও বাড়ানোর পুরো সিস্টেমই ব্যবসায়ীদের স্বার্থে করা হয়। ভোক্তাদের কোনো সুফল নেই। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়ানোর পর ব্যবসায়ীরা কখনও আগের দামে বিক্রি করেন না। তারা মুনাফা লুটে নেন। অথচ সয়াবিন তেলের দাম কমানো হলেও আমরা এর কোনো সুবিধা পাচ্ছিনা।
এ বিষয়ে যশোরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আইন অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকেই নতুন নির্ধারিত দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করতে হবে। যশোরের বাজারে সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছেনা এমন খবর আমাদের কাছেও আছে। এজন্য গতকাল আমি ও জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক যশোরের বড় বাজারের কয়েকজন বড় ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলেছি। তাদেরকে নতুন দামে সয়াবিন তেল বিক্রির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।