যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল টেন্ডারবাজির নেপথ্যে একজন ঠিকাদার, সিদ্ধান্ত নেবে মূল্যায়ন কমিটি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে মেডিকেল সার্জিক্যাল রি-এজেন্ট (এমএসআর) মালামাল সরবরাহে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে ১৩টি দরপত্র জমা দেয়া হলেও কাজ করবেন একজন ঠিকাদার। ওই ঠিকাদার নেপথ্যে থেকে সন্ত্রাসীদের সাহায্যে অন্যান্য ঠিকাদারদের দরপত্র জমাদানে বাধার সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারকে মারপিট ও দরপত্র ছিনিয়ে নেয়ার বিষয়টি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভায় উত্থাপন করা হবে বলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন।
এমএসআর মালামাল ক্রয়ের ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার দরপত্র জমা দেয়ার দিন ছিল গত সোমবার। ওই দিন টেন্ডার বাক্সে দরপত্র ফেলার সময় হাসপাতালে সন্ত্রাসীরা জনৈক ঠিকাদারের পক্ষে সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। পুলিশের উপস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা আজিজুল হক নামে এক ঠিকাদারকে মারপিট করে এবং তার মেসার্স মামুন ড্রাগস ও মেসার্স অপরাজিতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে ক্রয় করা ৬ কোটি টাকার দরপত্র ছিনিয়ে নেয়। টেন্ডারবাজিতে শহরের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দেখে প্রাণ ভয়ে অন্যান্য ঠিকাদাররা দরপত্র জমা না দিতে ফিরে যেতে বাধ্য হন। এ পরিস্থিতিতে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধায়ক ও পুলিশ সুপারের অফিসে রক্ষিত টেন্ডার বাক্সে ৬টি গ্রুপে মোট ১৩টি দরপত্র জমা দেন। এর ভেতর একজন ঠিকাদার যশোরের। অপর ২ জন ঢাকার ।
সূত্র জানিয়েছেন, ঢাকার যে দু’জন ঠিকাদার দরপত্র জমা দিয়েছেন, তারা মূলত যশোরের একজন ঠিকাদারের লোক। ওই ঠিকাদারই নেবেন সব কাজ। কাজের কৌশলগত বৈধতা নেয়ার জন্যে সাপোর্ট হিসেবে ঢাকার দু’ঠিকাদারকে দিয়ে সিডিউল ক্রয় করানো হয়।
সূত্র জানিয়েছে, এবারের টেন্ডারে ৬টি গ্রুপে ১শ ৮১টি দরপত্র বিক্রি হয়েছে। কিন্তু মাত্র ১৩টি দরপত্র জমা পড়ায় দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। জনৈক ঠিকাদার নিগোসিয়েশনের মাধ্যমে অনেকের দরপত্র নিজের অনুকূলে কিনে নিয়েছেন। বাকী ঠিকাদারদের সন্ত্রাসের মাধ্যমে টেন্ডার বাক্সের ধারে কাছে আসতে দেয়া হয়নি।
মেসার্স আজিজুল হক নামে যে ঠিকাদার সমঝোতায় না এসে ভয় উপেক্ষা করে দরপত্র জমা দিতে আসেন তাকে সন্ত্রাসীদের দিয়ে মারধর করে দরপত্র ছিনিয়ে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ নিলেও তার কোন রিসিভ কপি আজিজুল হককে দেননি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। এতে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকাকে রহস্যজনক মনে করছেন দরপত্র জমা দিতে না পারা ওই ঠিকাদার। বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হবেন বলে আজিজুল হক জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামানের সাথে তার কার্যালয়ে আলাপ করলে তিনি বলেন, ছিনিয়ে নিয়েছে কারা তার ভিডিও ফুটেজ হাসপাতালের সিসি ক্যামেরায় রয়েছে। পুলিশ ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব তাদের। সিডিউল বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান কিংবা দরপত্র জমা দেয়ার জন্য সময় বাড়িয়ে দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তত্ত্বাবধায়ক বলেন, কাজটা এতো সহজ না। একবার সরকারিভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। তা বাতিল করা কষ্টকর। তত্ত্বাবধায়ক আরো বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির মিটিং আছে। ওই মিটিং এ বিষয়টি উত্থাপন করা হবে। দেখা যাক মূল্যায়ন কমিটি মতামত কী দেয়। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।