যশোরে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার স্ত্রী রোশনী খুনের ক্লু অনুদঘাটিত

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিন বছর আগে হজ্জ পালন করে এসেছেন। কারো সাথে কোনো দ্বন্দ্বও ছিলো না। তবে একাকী থাকতেন তিনি। সেই নারীকে কী কারণে খুন করা হলো তা বোধগম্য হচ্ছেনা। যশোর শহরের রেল রোড আশ্রম মোড়ে সাবেক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মরহুম মোস্তাফিজুর রহমানের স্ত্রী রওশন আরা বেগম রোশনী খুন হওয়ার পর এমনটিই বলেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এখনো পর্যন্ত হত্যাকান্ডের ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেন নি।
সাবেক পৌর কমিশনার আবু শাহজালার মুন্তাজ জানান, নিহত রোশনী সম্পর্কে তার ছোটচাচি। ২০১৯ সালে তিনি হজ্জ পালন করে এসেছেন। বাড়িতে তিনি একাকী থাকতেন। কিন্তু কারো সাথে তার কোনো বিরোধ ছিলোনা। আগে তিনি স্বজনসহ কারো সাথে বেশি কথা বলতেন না। তবে হজ্জ পালন করে ফিরে আসার পর থেকে স্বজনদের সাথে আলাপ করতেন। তবে কী কারণে তার ছোটচাচিকে খুন করা হয়েছে তা তার বোধগম্য হচ্ছেনা। তিনি আশা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনসহ খুনিদের আটক করতে পারবে।
নিহত রওশন আরা বেগম রোশনীর বাড়ির ভাড়াটিয়া রিকশা-সাইকেল গ্যারেজ মিস্ত্রি শফি জানান, তিনি ৫ বছর ধরে তার বাড়িতে ভাড়া রয়েছেন। মাঝে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফের এই বাড়িতে চলে এসেছেন। তার বাড়িওয়ালার সাথে কারো কোনো দ্বন্দ্ব ছিলো কি-না তা জানা নেই। বাড়িওয়ালা নারী হওয়ায় তার সাথে কম কথা হতো। কী কারণে তাকে খুন করা হলো তিনিও বুঝতে পারছেন না। ডিবি পুলিশ শফি ও তার ছেলে সোহেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গিয়েছিলো। গত বুধবার বিকেলে তাদের ছেড়ে দিয়েছে বলে জানালেন শফি।
স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়, তারা রেলবাজার এলাকার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসীকে সন্দেহ করছেন। ওই সন্ত্রাসী রেলবাজার ও আশ্রম মোড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে। রেলস্টেশন এলাকাতেও সে ছিনতাইয়ের মতো কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। যেদিন ওই নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে ওইদিন দুপুরে তার চালচলনে অস্বাভাবিকতা দেখতে পাওয়া গেছে। হয়ত রোশনী হত্যাকান্ডে তিনি জড়িত থাকতে পারেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব জানান, তারা এখনো পর্যন্ত হত্যাকান্ডের কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেন নি। নিহতের ঘরে একটি ছুরি পাওয়া গিয়েছিলো। কিন্তু ছুরিটি হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে এমন কোনো আলামত তাতে ছিলোনা। এ কারণে ছুরিটি হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে একথা বলা যাচ্ছেনা।
ডিবি পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, তারাও হত্যার বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেন নি।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একজন কর্মকর্তা বলেন, তারা ছায়া তদন্ত করছেন। কিন্তু তারাও হত্যার বিষয়ে কোনো ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেন নি। রেলবাজার এলাকার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসীকেও তারা সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন।
গত ২৯ আগস্ট বিকেলে রোশনীর মা সেবিনা বেগম মেয়ের বাড়িতে আসার পর তার খুনের বিষয়টি টের পাওয়া যায়। পরে পুলিশ এসে নিহত রোশনীর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন।