মণিরামপুরে বিএনপির বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত স্বৈরাচার সরকারের চূড়ান্ত পতন না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে সকলকে মাঠে থাকতে হবে

0

স্টাফ রিপোর্টার, মণিরামপুর(যশোর)॥ বিএনপির খুলনা বিভাগীয় (ভারপ্রাপ্ত) সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, দেশের বর্তমান ক্রান্তিলগ্নে স্বৈরাচার সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। চূড়ান্ত পতন না হওয়া পর্যন্ত জনগণকে সাথে নিয়ে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনে মাঠে থাকতে হবে। রাজপথে জনগণের এ আন্দোলনেই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হবে ইনশা আল্লাহ। স্বৈরাচার সরকারকে হটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব। আর এ জন্যে নিজেদের মধ্যে সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয় ভুলে যাননি মণিরামপুরে এই সরকারের আমলে বিএনপির একডজন নেতাকর্মীকে শহীদ হতে হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভোলার নুর আলম ও রহিমকেও শহীদ হতে হয়েছে। এ সব শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে চলমান স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে হবে। তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়ে গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হলেই সেইসব শহীদের আত্মা শান্তি পাবে। আর এ জন্যে প্রতিটি নেতাকর্মীকে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারের জন্যে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তেল, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি ও ভোলায় ছাত্রদল নেতা নুর আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আলোকে তৃণমূলে আন্দোলনের অংশ হিসেবে যশোর জেলায় সর্বপ্রথম সোমবার মণিরামপুর উপজেলায় বিশাল বিক্ষোভ সামবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের পাশে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। পূর্ব নির্ধারিত সময় বিকেল তিনটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টা থেকে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের শ শ নেতাকর্মী সরকার বিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। সমাবেশ স্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। বিকেল তিনটার দিকে সমাবেশস্থল বিস্তৃতি লাভ করে দোলখোলা মোড়, গরুহাটা মোড়, ধান বাজার, বাসস্ট্যান্ড, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, তরকারি বাজার, রাজগঞ্জ মোড়সহ বিভিন্ন স্থান কানায় কানায় ভরে ওঠে। অবশ্য পৌর শহরের বিভিন্ন মোড়ে এ সময় পুলিশের অবস্থান ছিল চোখে পড়ার মত। বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে সমাবেশস্থলে হাজির হন অমন্ত্রিত প্রধান ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ। বিশেষ করে এ সময় প্রধান অতিথি প্রিয় নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে কাছে পেয়ে দলীয় হাজার হাজার নেতাকর্মীরা আবেগে আপ্লুত হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এ সময় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দুই হাত উঁচু করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশ থাকলেও শেষ পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে বিশাল জনসভায় পরিণত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন। বিকেল ছয়টা ১০ মিনিটে প্রধান অতিথি অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বক্তব্য শুরু করে শেষ করেন সাড়ে ছয়টায়।
আসাদুজ্জামান মিন্টু ও নিস্তার ফারুকের যৌথ পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, মিজানুর রহমান খান, আবদুস সালাম আজাদ, মোহাম্মদ মুছা, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কেশবপুর বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হোসেন আজাদ, যশোরের সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, মুনির আহম্মদ সিদ্দিকী বাচ্চু, হাজী আনিছুর রহমান মুকুল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মণিরামপুর পৌর বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হাই, মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট মকবুল ইসলাম, জিএম মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর বিশ্বাষ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলাম রিয়াদ প্রমুখ।