যশোরে নির্যাতন চালিয়ে নারীর গর্ভের সন্তান হত্যার অভিযোগ

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়ে রেহেনা খাতুন নামে এক নারীর গর্ভের সন্তান হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। এমনকী বাধ্য করতে লোকার শিক গরম করে তার শরীরে ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারী স্বামী ও শাশুড়িকে আসামি করে রোববার আদালতে মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল অভিযোগের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) আদেশ দিয়েছেন।
আসামিরা হলেন-যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের মৃত ফজলুল হকের ছেলে মো. বাবলু ও স্ত্রী খায়রুন্নেছা। অপরদিকে ভুক্তভোগী রেহেনা খাতুন বাঘারপাড়া উপজেলার নরসিংহপুর গ্রামের মো. আব্দুস সাত্তারের মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ১৭ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৫ সালে আসামি বাবলুর সাথে রেহেনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের পিয়া খাতুন নামে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। যার বর্তমান বয়স ১৬ বছর। সন্তান জন্ম গ্রহণের পর থেকে যৌতুক দাবিসহ প্রতারণামূলক একাধিক বিয়ে ও মাদক সেবনের কারণে বাবলুর সাথে রেহেনা খাতুনের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে ৫ বছর আগে সন্তানসহ রেহেনা খাতুনকে তার স্বামী বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর বাবলু ফের স্ত্রী ও সন্তানকে ফিরিয়ে এনে সংসার শুরু করেন। এরই মধ্যে গত ২৭ মার্চ রেহেনা খাতুন গর্ভবর্তী হয়ে পড়েন। এক মাস পর বাবলু তার স্ত্রীকে গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করতে বললে তিনি তাতে রাজী হননি। অস্বীকার করায় বাবলু ও তার মা খায়রুন্নেছা পুত্রবধূকে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। গর্ভবর্তী হওয়ার আড়াই মাস পর মেয়ে পিয়া খাতুন স্কুলে থাকায় এই সুযোগে ঘরের দরজা বন্ধ করে রেহেনা খাতুনকে বেদম মারধর করেন তার স্বামী বাবলু ও শাশুড়ি খায়রুন্নেছা। তারা খাটের সাথে তার হাত-পা বেঁধে রেখে নির্যাতনের পাশাপাশি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলেন। অস্বীকার করায় তারা লোহার শিক গরম করে রেহেনা খাতুনের দুই হাতের বাহুতে কয়েক দফা ছ্যাঁকা দেন। এরই এক পর্যায়ে গলাটিপে ধরে হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার ওষুধ জোরপূর্বক খেতে বাধ্য করেন বাবলু ও তার মা খায়রুন্নেছা। এ কারণে পরদিন রেহেনা খাতুনের গর্ভপাত ঘটে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে মেয়ে পিয়া খাতুনতে পিটিয়ে জখম করেন বাবলু। ফলে পিতার অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে নানার বাড়িতে চলে যায় পিয়া। এরপর গত ১৩ আগস্ট পিতার বাড়িতে চলে যান রেহেনা খাতুন। এ ঘটনায় রেহেনা খাতুন থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। এ কারণে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন রেহেনা খাতুন।