যশোরে ছাত্রলীগ নেতা দাদা রিপন হত্যামামলা আবারও রাজপথে গড়াচ্ছে আন্দোলন মানববন্ধন থেকে খুনিদের ফাঁসি দাবি

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক প্রয়াত রিপন হোসেন ওরফে দাদা রিপন হত্যার দ্রুত বিচার দাবিতে আন্দোলন আবারও রাজপথে গড়াচ্ছে। দীর্ঘ ১৩ বছর পরও চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকা-ের বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিচারের দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন। সোমবার প্রেস ক্লাব যশোরের সামনে এক মানববন্ধন থেকে হত্যাকা-ের সাথে জড়িত প্রধান আসামি আরবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলামের ফাঁসি দাবি করেন তারা। মানববন্ধনটি এলাকাবাসীর ব্যানারে হলেও সেখানে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগের জেলা সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে দলটির বিবদমান দু পক্ষ। এসময় দু পক্ষের লড়াইয়ে শহরের কেন্দ্রস্থল রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সে সময় অন্তত ৫০টি হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয় প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে। গোলাগুলি চলে প্রায় ঘন্টাব্যাপী। এতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
লড়াইয়ের রেশ ধরেই পরদিন ১৫ মার্চ রাতে সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের রঘুরামপুরে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা দাদা রিপন। ওই ঘটনায় তার পিতা শহিদুল ইসলাম আওয়ামী লীগ নেতা শাহারুল ইসলামসহ ৮ জনকে আসামি করে কোতয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। এরপর হত্যাকা-ের দীর্ঘ ৩ বছর পর ২০১৩ সালে পুলিশ এ মামলায় শাহারুলকে অভিযুক্ত করে ৬ জনের নামে চার্জশিট দেয়।
এদিকে ২০১৩ সালে এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দিলেও এখনও পর্যন্ত মামলার কোনো সাক্ষ্যগ্রহণ বা বিচার শুরু হয়নি। মামলার এ দীর্ঘসূত্রতায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। সোমবার মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের দাবিতে এলাকার কয়েক শ লোক ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে প্রেস ক্লাব যশোরের সামনে মানববন্ধন করেন। এ সময় মানববন্ধন থেকে বক্তারা এ হত্যাকা-ের সাথে যুক্ত প্রধান আসামি আওয়ামী লীগ নেতা শাহারুল ইসলামের ফাঁসি দাবি করেন। এ সময় বক্তারা বলেন, আরবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম একজন খুনি। তার ইন্ধনে ছাত্রলীগ নেতা দাদা রিপনসহ বেশ কয়েকটি খুন হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত তার বিচার করা হয়নি। মানববন্ধন থেকে বক্তারা বলেন, এলাকায় ভূমিদস্যু, লুটেরা, খুনি হিসেবে পরিচিত শাহারুল ইসলাম টাকার জোরে দীর্ঘদিন ধরে মামলাটির স্বাভাবিক কার্যক্রম চেপে রেখেছেন। মামলাটির স্বাভাবিক গতি থাকলে এতোদিন স্বজনরা ন্যায় বিচার পেতেন। যেকারণে মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় স্বজনরা চরমভাবে হতাশ হচ্ছেন। মানববন্ধন থেকে অবিলম্বে দাদা রিপন হত্যা মামলার দ্রুত বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে প্রধান আসামি শাহারুল ইসলামের ফাঁসি দাবি করেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে এলাকাবাসীর মধ্যে বক্তব্যে রাখেন, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ সরদার, আরবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আলী, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য শিমুল সরদারসহ আরও অনেকে।