যশোরে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও চাঁদা নেয়ার অভিযোগে আটক ৪

0

 

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে ব্যবসার কথা বলে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার আক্তারুজ্জামান (৫৩) নামে এক কয়লা ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে অপহরণ, চাঁদা আদায় এবং ব্যাংকের চেক ও সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ৪ জনকে আটক করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার তালবাড়িয়া থেকে তাদের আটক করা হয়। এর মধ্যে একজন তালবাড়িয়া কলেজের সভাপতি রয়েছেন।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী কয়লা ব্যবসায়ী বৃহস্পতিবার আটক ৪ জনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে করে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। আসামিরা হলেন-তালবাড়িয়া গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (৩৩), আমানত আলীর ছেলে কামাল হোসেন হিরা (৪৭), শের আলীর ছেলে সাইদুর রহমান সাঈদ (৩২), মৃত আব্দুল লতিফ সরদারের ছেলে সোবাহান আলী (৪৮), কিসমত নওয়াপাড়া গ্রামের মৃত ওহেদুল ইসলামের ছেলে তৌশিকুল ইসলাম তানিম (৩২), তালবাড়িয়া গ্রামের মৃত কাশেম বিশ্বাসের ছেলে কামরুল (৪৫), আরশাদ আলী গাজীর ছেলে কুদ্দুস (৫০), মোহাম্মদ কবিরের ছেলে শিপন (২০), আজিজুর রহমানের ছেলে মুন্না (২৫) ও একই এলাকার আব্দুল্লাহ (৩২)। এর মধ্যে প্রথম ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কামাল হোসেন হিরা তালবাড়িয়া কলেজের সভাপতি।
অভয়নগরের নওয়াপাড়া হাসপাতাল রোডের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে আক্তারুজ্জামান মামলায় উল্লেখ করেছেন, নওয়াপাড়া এলাকায় তার কয়লার দোকান রয়েছে। আসামি ইয়াসিন আরাফাত তার পূর্ব পরিচিত। তার কাছ থেকে কয়লা নিয়ে ইয়াসিন আরাফাত বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করতেন। এই ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি ইয়াসিনের কাছে ২০ লাখ টাকা পেতেন। গত বুধবার উল্লিখিত আসামিদের মধ্যে তৌশিকুল ইসলাম তানিম মোবাইল ফোন করে কয়লা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা আছে বলে আক্তারুজ্জামানকে যশোরে আসতে বলেন। এদিন বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তিনি যশোরের উপশহর এলাকায় এলে আসামিরা তাকে একটি প্রাইভেটকারে তাকে উঠতে বলেন। অস্বীকার করলে আসামিরা তাকে জোর করে প্রাইভেটকারে উঠান এবং তালবাড়িয়া গ্রামে আসামি কামাল হোসেন হিরার মাছের ঘেরে নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রেখে মারধর এবং তার মাথায় পিস্তল ও চাকু ঠেকিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। রাজি না হওয়ায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর তার কাছে থাকা ৪৬ হাজার এবং বিকাশের মাধ্যমে আরো ২০ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে নেন আসামিরা নেয়। পরে আগ্রণী ব্যাংকের তিনটি চেকে ১১ লাখ টাকা লিখে সেখানে স্বাক্ষর করিয়ে নেন আসামিরা। একই সাথে তিনটি সাদা স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া হয়। এরপর আসামি ইয়াসিনের ইতোপূর্বে দেয়া ২০ লাখ টাকার ডিজঅনার হওয়া চেকটি নিয়ে আসতে বলেন আসামিরা। পরে তিনি অভয়নগরের একতারপুর গ্রামের রাজ ফারাজি নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চেকটি নিয়ে আসেন এবং তাদের হাতে তুলে দেন। এরপর হুমকি ধামকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেন আসামিরা। এ ঘটনার পর তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ এসে ৪ জনকে আটক এবং স্বাক্ষর করিয়ে নেয়া স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের চেকের পাতা উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তালবাড়িয়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই একরামুল হুদা জানান, আটক ৪ আসামিকে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আটক ৪ জন আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জামিনের আবেদন জানালে ইয়াসিন বাদে অপর ৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।