যশোরে ডিম প্রতি পিস ১১ টাকা, বাড়তি দামে বিক্রি আটা ময়দা লবণ সাবান সোডা

0

 

শেখ আব্দুল্লাহ হুসাইন ॥ যশোরে হঠাৎ করেই ডিমের দাম বেড়েছে। প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকা। খামারিদের দাবি মুরগির খাবারের উপাদানের দাম অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে। এদিকে আটা-ময়দা, লবণ, সাবান, সোডা ও ওয়াশিং পাউডার এবং আলুর দামও বেড়েছে। ভোক্তাদের অভিমত আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার অজুহাতে ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফালাভের আশায় নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার যশোরের বড়বাজার ঘুরে দেখা যায়, একদিন আগেও আফিল লেয়ার ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি খুচরা পর্যায়ে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। আর ৪-৫ দিন আগে বিক্রি হয়েছিল ৪০ টাকায়। গতকাল আফিল লেয়ার ফার্মের ডিম প্রতি হালি ৪৪ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। অর্থাৎ প্রতি পিস ডিমের দাম ১১ টাকা। আফিল ফার্মের এক ডজন ডিমের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা। অন্যদিকে বড়বাজারে পাবনা ও সাতক্ষীরার ফার্মের মুরগির ডিমও প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায়। বড়বাজারে খুচরা ডিম বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা বাবলা ডিমের দাম হঠাৎ করে বাড়ার কোনো কারণ জানাতে পারলেন না। তিনি জানান তাদের বেশি দাম দিয়ে ডিম কিনতে হচ্ছে।
তবে ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে আফিল গ্রুপ যশোরের ডিম বিভাগের মার্কেটিং ম্যানেজার মো. আকতারুজ্জামান জুয়েল বৃহস্পতিবার লোকসমাজকে জানান, ‘মুরগির খাবারের বিভিন্ন উপাদানের দাম বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। বেড়েছে ভ্যাকসিন ও মেডিসিনের দাম। প্রতিটি মুরগির জন্য অন্তত ১৪ ধরনের খাবার উপাদান লাগে। তাছাড়া খাবার তৈরিতে সয়াবিন তেল, ভুট্টা লাগে। এসবের প্রায় সব উপাদানই আমদানি করতে হয়। সেই সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দামও বেড়ে গেছে। দেশের অনেক খামারে ডিমের মুরগি উঠাচ্ছে না। এসব নানা কারণে ডিমের দাম বেড়েছে।’
এদিকে,বড়বাজারে খোলা আটা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা। মাসখানেক আগে বিক্রি হয়েছিল ৩৮ টাকা দরে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি আটার প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৩ টাকা। মাসখানেক আগে ছিল ৪৫ টাকা। খোলা ময়দা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৩ টাকা দরে। মাসখানেক আগে বিক্রি হয়েছিল ৫৫ টাকায়। এসিআই ও কনফিডেন্স কোম্পানির প্রতি কেজি লবণের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। মাসতিনেক আগে বিক্রি হয়েছিল ৩০ টাকায়।
যশোরে এসিআই কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর মো. শফিকুজ্জামান বৃহস্পতিবার এ প্রতিবেদককে জানান, ‘গ্যাসের সংকটের কারণে পণ্যের সরবরাহ কম। আগামীতে দাম কমবে কিনা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না।’
শুধু আটা ময়দা লবণ নয়, বেড়েছে সাবান, সোডা ও ওয়াশিং পাউডারের দামও। এক মাসের ব্যবধানে ৬টাকা বেড়ে লাক্স ১০০ গ্রাম ওজনের সাবান বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়। ১২৫ গ্রাম ওজনের ডেটল সাবান বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। মাসখানেক আগেও বিক্রি হচ্ছিল ৫৫ টাকায়। ওয়াশিং পাউডার ১২৫ গ্রাম ওজনের হুইলের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ২৪ টাকা দরে। আগে বিক্রি হয়েছিল ২০ টাকায়। চায়না সোডা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকা দরে। আগে এর দাম ছিল ৬০ টাকা।
গতকাল কথা হয় বাজার করতে আসা জনৈক ক্রেতা মোজাম্মেল হকের সাথে। তিনি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়াতে দেশের কিছু ভোগ্যপণ্য উৎপাদনকারীও থেমে থাকেননি। এই সুযোগে তারাও তাদের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কারণ সাধারণ মানুষ সয়াবিন তেলের দাম কেন বেড়েছে এই প্রশ্নে বিভোর রয়েছে।
অপরদিকে, বড়বাজারে কার্ডিনাল আলু (লাল) প্রতি কেজি ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দু সপ্তাহ আগেও ২৪-২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। কোনো কোনো বিক্রেতা ৩০ টাকা দামও নিচ্ছেন। বড়বাজার কালীবাড়ি এলাকার পাইকারি কাঁচামাল ব্যবসায়ী মদিনা ভা-ারের স্বত্বাধিকারী মো. জিয়া এ প্রতিবেদককে জানান, ‘কোলডস্টোরেজে পর্যাপ্ত আলু মজুত আছে। সরবরাহের ঘাটতি নেই। আপাতত দাম বাড়ার কোনো লক্ষণ নেই। তবে সামনের দিনগুলোতে আলুর দাম যদিও বা বাড়ে সে ক্ষেত্রে খুব বেশি হলে কেজিতে ২ টাকা হতে পারে।’