হয়াতপুর আবাসন প্রকল্পের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস ২০ ভূমিহীন পরিবারের

0

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের হয়াতপুর গ্রামের আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে বসবাস করছেন। ১৯৯৯ সালে নির্মিত আশ্রয় কেন্দ্রের ২টি ব্যারাকে মোট ২০টি ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। বর্তমানে এই আবাসন প্রকল্পের সকল ঘর ও টিনের চালসহ বেড়াগুলো সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। অথচ এই টিনের নির্মিত ব্যারাকগুলো মেরামত ও সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যথা নেই।
দীর্ঘ ২৪ বছর সেখানে বসবাস করলে ও সরকারি অনুদানসহ কোন সাহায্য সহযোগিতা তারা পায়নি বলে জানান আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারিরা। এদিকে আবাসন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের পর থেকে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় এ দু’টি ব্যারাকে নির্মিত ২০টি ঘরের দরজা, জানালা একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। সেই সাথে নষ্ট হয়ে গেছে টিনের চাল। মরিচা ধরে পুরো ব্যারাকের ২০টি ঘরের টিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে এ সকল ঘরে বসবাস করা মুস্কিল বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। পাশাপাশি টিনের বেড়ার ক্ষতিসহ নানা সমস্যায় সেখানে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
চালুয়াহাটি ইউনিয়নের হয়াতপুর আবাসন প্রকল্পের ভুক্তভোগী বাসিন্দরা জানান, ব্যারাকগুলো নির্মাণের পর থেকে প্রায় দুইযুগ ধরে তারা এখানে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। এ পর্যন্ত আবসন প্রকল্পের এই ঘরগুলো মেরামত না হওয়ায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি নষ্ট টিনের চাল দিয়ে সরাসরি ঘরের মধ্যে পড়ে। অনেকটা বাধ্য হয়ে নষ্ট টিনের চালের উপর ও নিচে পলিথিন টাঙিয়ে বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন তারা। বর্তমানে এই নষ্ট ঘরে ভূমিহীন এ মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যথা নেই।
চারজনের মুখের আহার জুগাতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় অসহায় বিধবা আমেনা বেগমের। তিন মেয়ে এক ছেলের সংসারে একমাত্র মা-ই যেন তাদের ভরসা। কিন্তুু ছেলে মেয়েদের মুখে তিন বেলাই আহার জোগাতে পারেন না বিধবা মা আমেনা বেগম। পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন এ পরিবারটি। আবাসন প্রকল্পে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সমাজের কোন ব্যক্তি তাদের সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি। রোববার কোরবানির ঈদ কেনাকাটা তো দূরের কথা ঈদের দিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে কি যে খাবেন সেই চিন্তায় ঘুম আসছেনা তার। বৃহস্পতিবার সরজমিনে হয়াতপুর আবাসন প্রকল্পে গেলে সেখানে আশ্রয় নেয়া বিধবা আমেনা বেগম আবেগ জড়িত কন্ঠে একথাগুলো বলেন।
ওই আবাসন প্রকল্পে আশ্রয় নেয়া দিনমজুর আমিন উদ্দিন ঘ্যানা দুঃখ করে বলেন, তারা ইটের দালান চান না। আবাসন প্রকল্পের এই টিনের নির্মিত ব্যারাকগুলো মেরামত ও সংস্কার চান। এব্যাপারে চালুয়াহাটি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, আবাসন প্রকল্পের এ ঘরগুলো মেরামতের বিপরীতে কোন বরাদ্দ না থাকায় মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এই আবাসন প্রকল্পে বসবাসকারীদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ যা কিছু করার সেগুলো তিনি অব্যাবহতভাবে করে যাচ্ছেন।