যশোর আদালতে স্বামী কামরুলের স্বীকারোক্তি ‘সালমা ভারত থেকে ফিরে আসতে না চাওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়’

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘স্ত্রী সালমা খাতুন ভারতের গুজরাট রাজ্যের আনন্দ জেলার ভালেজ থানার আনন্দপুরে যাওয়ার পর জামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ কারণে সালমা খাতুন তার স্বামী কামরুল ইসলামের সাথে দেশে ফিরে আসতে চাননি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার পর হামানদস্তা দিয়ে মুখম-ল থেতলে পালিয়ে দেশে ফিরে আসেন কামরুল ইসলাম।’ যশোরে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের মামলার আসামি কামরুল ইসলামকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গত বুধবার রাতে সদর উপজেলার বসুন্দিয়া এলাকায় কোতয়ালি থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, সালমা খাতুন সদর উপজেলার বসুন্দিয়া বাজার এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে। তিন বছর আগে বানিয়ারগাতি গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে কামরুল ইসলামের সাথে তার বিয়ে হয়। গত ১৫ এপ্রিল স্বামী-স্ত্রী ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। এরপর স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে দেশে ফিরে আসেন কামরুল। কিন্তু সালমা দেশে ফিরে না আসায় এবং কামরুলের কাছে তার সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো জবাব না পাওয়ায় মেয়েকে পাচার করা হয়েছে মর্মে গত বুধবার কোতয়ালি থানায় মামলা করেন শহিদুল ইসলাম। এরপর ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় মামলার আসামি কামরুল ইসলামকে। তার কাছ থেকে সালমা খাতুনের পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, কামরুলকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছেন যে, ভারতের গুজরাট রাজ্যের আনন্দপুর এলাকায় স্বামী-স্ত্রী যাওয়ার পর একটি বাড়ি ভাড়া নেন। সেখানকার জামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি তাদের বাড়ি ভাড়া নিতে সহায়তা করেন। এক পর্যায়ে জামাল হোসেনের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন সালমা খাতুন। বিষয়টি জানতে পেরে কামরুল স্ত্রীকে তার সাথে দেশে ফিরে আসতে বলেন। কিন্তু সালমা তাকে ছাড়াই কামরুলকে দেশে ফিরে যেতে বলেন। এ নিয়ে গত ৬ মে সন্ধ্যায় ভাড়া বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কামরুল স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে হামানদস্তা দিয়ে স্ত্রীর মুখম-ল থেতলে দেন। এরপর ওই রাতেই সেখান থেকে পালিয়ে যান কামরুল ইসলাম। স্ত্রীর পাসপোর্ট নিয়ে তিনি দেশে ফিরে আসেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডের দিন রাতেই ঘরের মধ্যে সালমা খাতুনের লাশ দেখতে পান বাড়িওয়ালা। তিনি পরদিন ৭ মে ভোরে লাশটি স্থানীয় একটি খালের মধ্যে ফেলে রেখে আসেন। ওইদিনই সেখানকার পুলিশ খাল থেকে সালমার লাশ উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালি থানা পুলিশের এসআই বিমান তরফদার জানান, আটক কামরুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ মে এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ দৈনিক লোকসমাজে প্রকাশিত হয়েছে।