ঢাকায় নিউমার্কেটে হত্যাকাণ্ড : ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আটক নিয়ে লুকোচুরি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রাজধানীর নিউমার্কেটে দুই খুনের সাথে জড়িত সন্দেহভাজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কেউ এখন আর ছাত্রাবাসে নেই। এদিকে তাদের আটক নিয়ে চলছে লুকোচুরি। এ ঘটনায় কয়েক জনকে আটক করা হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেখা গেছে পুরো ক্যাম্পাস ছাত্রশূন্য।
আটকের ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলেন, শনাক্ত করা ছয়জন সবাই ঢাকা কলেজের ছাত্র। ঘটনার সময় কয়েকজন হেলমেট পরা ছিল। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
যে ছয়জন প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে এই ছয়জনের নাম বা বিস্তারিত পরিচয় জানাননি পুলিশ কর্মকর্তা।
নাহিদ হত্যা মামলার তদন্তের সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, এটা খুবই সেনসিটিভ একটি তদন্ত। এটা নিয়ে আমরা মোটেও তাড়াহুড়ো করতে চাই না। আমরা শতভাগ নিশ্চিত হয়েই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনব। আমরা অনেককেই চিহ্নিত করেছি, কিন্তু কারো পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারিনি।
অবশ্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভিডিও বিশ্লেষণ করে কয়েকজনের নাম ইতোমধ্যে সংবাদমাধ্যমের খবরে এসেছে। তারা সবাই ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
এ দিকে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রোববার ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। তবে সেখান থেকে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।

ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মইনুল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শনাক্ত হয়েছে এমন কোনো ছাত্রের ব্যাপারে তথ্য জানতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কোনো সদস্য তার কাছে আসেননি, জানতেও চাননি। কোনো শিক্ষার্থী গ্রেফতার হয়েছে কি নাÑ এমন তথ্যও নেই জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, রোববার ছাত্রাবাসে গোয়েন্দা পুলিশ আলামত উদ্ধারের জন্য অভিযান চালায়। তারা একজনকে নিয়েছিল, পরে ছেড়ে দিয়েছে তবে তার মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে।


গত ১৮ এপ্রিল ইফতারের টেবিল বসানো নিয়ে নিউমার্কেটের দুই দোকানের কর্মীদের বচসার পর এক পক্ষ ঢাকা কলেজ ছাত্রাবাস থেকে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মীকে ডেকে আনে। তারা গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ার পর ছাত্রাবাসে ফিরে আরো শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে নিউমার্কেটে হামলা চালাতে গেলে বাধে সংঘর্ষ। পরদিন দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। তাদের মধ্যে এলিফ্যান্ট রোডের একটি কম্পিউটার এক্সেসরিজের দোকানের ডেলিভারিম্যান নাহিদকে কুপিয়ে জখম করা হয়। আর ইটের আঘাতে আহত হন মোরসালিন নামে এক দোকানকর্মী। পরে হাসপাতালে মারা যান তারা দু’জন।
দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে দু’টি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া সংঘর্ষ ও বোমাবাজির ঘটনায় আলাদা দু’টি মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে হত্যা মামলা দু’টির তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ, বাকি দুই মামলা থানা পুলিশ তদন্ত করছে।
[সূত্র : নয়া দিগন্ত]