১৫ রমজানের পর জাকাতের কাপড় বিক্রি বাড়বে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ইসলামী শরিয়া মতে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকানা এক বছর অতিবাহিত হলে মালিকের ওপর জাকাত ফরজ হয়। মূলত এর মাধ্যমে সম্পদকে পরিশুদ্ধ করা হয়। ইসলামের বিধান অনুযায়ী জাকাত দিয়ে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। বছরের যে কোনো সময় জাকাত দেওয়া গেলেও অতিরিক্ত সোয়াবের আশায় সিংহভাগ মুসলমান পবিত্র রমজান মাস বেছে নেন জাকাত দেওয়ার জন্য।
দেশে সম্পদের জাকাত হিসেবে নগদ অর্থের পাশাপাশি পরিধেয় পোশাকও বিতরণ করার প্রচলন রয়েছে। এ কারণে রমজান এলেই কদর বাড়ে ‘জাকাতের কাপড়ের’। ক্রেতার চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবসায়ীরাও নেন বাড়তি প্রস্তুতি। তবে পবিত্র রমজান মাসের আটদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জমে ওঠেনি সেসব কাপড়ের বিক্রি।
রোববার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট মোড়ে অবস্থিত মৌচাক মার্কেট, পীর ইয়ামেনী মার্কেট, বঙ্গ মার্কেট, ইসলামপুর ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এসব মার্কেটের অনেক দোকানে শাড়ি ও লুঙ্গি প্রস্তুত রাখলেও সে তুলনায় এখনো বিক্রি জমে ওঠেনি।এসব মার্কেটের বিক্রেতারা জানান, রমজানের আগে পবিত্র শবে বরাতের আগ মুহূর্তে কিছুটা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি নেই।
তারা বলেন, অনেকে আগেই কিনে রেখেছেন। তবে ১৫ রমজানের পর থেকে কাপড় বিক্রি শুরু হতে পারে। বড় বড় ব্যবসায়ী সাধারণত ঈদের কয়েক দিন আগে কাপড় কিনে গ্রামে নিয়ে যান। এ কারণে বলা যায় চাঁদ রাত পর্যন্ত বিক্রি চলবে।
তবে বিক্রেতারা জানান, কাপড় কেনার ধরনে পরিবর্তন এসেছে ক্রেতাদের মাঝে। কাপড় বিক্রেতারা জানান, একটা সময় সবাই কম দামি বা সস্তা কাপড়ের খোঁজ করতেন। এখন বেশি দামের কাপড়ও কেনেন জাকাত দেওয়ার জন্য। এখন ক্রেতাদের একটা বড় অংশ বেশি দামের কাপড় গরিবদের মাঝে বিতরণ করেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবার জাকাতের জন্য যেসব শাড়ি বিক্রি হচ্ছে তার মধ্যে সবচেয়ে কম দামের শাড়ির দাম প্রতি পিস ২৯০ থেকে ৩৫০ টাকা। এর থেকে একটু ভালো মানের শাড়ির দাম ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা। স্ট্যান্ডার্ড মানের শাড়ির দাম ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা। তবে অনেক ক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে এর থেকেও বেশি দামের শাড়ি জাকাতের কাপড় হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। সেগুলোর দাম ৬৫০ থেকে এক হাজারের মধ্যে।
পীর ইয়ামেনী মার্কেটে স্বর্ণলতা শাড়ি বিতানের ম্যানেজার বিমল বলেন, আমাদের এখানে শবে বরাতের আগে কিছুটা বিক্রি হয়েছে। এখন পনের রোজার পর এবং রোজার শেষ ভাগে বিক্রি বাড়বে। বড় ব্যবসায়ীরা রোজার শেষ ভাগে কাপড় কিনে গ্রামে নিয়ে যান।
একই কথা জানান মৌচাক মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আব্দুল্লা আয়াজ। তিনি বলেন, কাপড় বিক্রি এখনো জমে ওঠেনি। করোনার পর আমরা ভেবেছিলাম ভালো বিক্রি হবে। অন্য বছরের লোকসান কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া যাবে, কিন্তু বিক্রি নেই।
এসব মার্কেটে কম দামের লুঙ্গি প্রতি পিস ১৬৫ থেকে ২২০ টাকা। এর চেয়ে একটু ভালো মানের লুঙ্গির দাম ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড মান হিসেবে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকার মধ্যেও বিক্রি হচ্ছে লুঙ্গি।
তবে লুঙ্গির বাজারেও বিক্রি নেই তেমন। হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবারের জাকাতের কেনাকাটার জন্য আমরা পুরো প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। তবে ক্রেতার দেখা নেই। হয়তো রোজার মাঝামাঝি ক্রেতার আগমন হবে। আশা করি বিক্রি হবে।