সাগর-রুনি হত্যা: ১০ বছর পর শুরু হচ্ছে হাইকোর্টের রুল শুনানি

0

বিশেষ সংবাদদাতা॥ মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি দম্পতি হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজে বের করা এবং হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে ১০ বছর আগে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হচ্ছে। আজ বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি শুনানির তালিকায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদের রিটের সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। আইনজীবী মনজিল মোরশেদ গনমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গলবার বিষয়টি আদালতের কার্যতালিকায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলেছেন এবং কার্যতালিকায় থাকলে হাইকোর্ট ওই রুলের ওপর শুনানি করবেন।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ২০১২ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজে বের করা এবং হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে তার ব্যাখ্যা দিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। এ ছাড়া, এই খুনের চলমান তদন্তের কোনো সুনির্দিষ্ট অগ্রগতি ছাড়া গণমাধ্যমে কোনো বিবৃতি না দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। এরপর আমাদের পৃথক একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত র‌্যাবের কাছে চলে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ১০ বছরে মামলাটির চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। এখনো তদন্ত পর্যায়ে রয়ে গেছে।
১০ বছর আগে জারি করা রুলের শুনানির জন্য আমরা সোমবার কোর্টে আবেদন করেছিলাম। আদালত জারি করা রুলের ওপর শিগগির শুনানি করতে বিষয়টি শুনানির তালিকায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা চাচ্ছি, তদন্ত যেন তাড়াতাড়ি শেষ করে প্রকৃত আসামিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করা যায়। ২০১২ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারে সাংবাদিক দম্পতি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি তাদের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই বছরের ১২ই ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়। অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।
প্রথমে মামলার তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার এক কর্মকর্তা। ১৬ই ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর। দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)কে । সেই থেকে প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি। সর্বশেষ গত ২৭শে মার্চ এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু নির্ধারিত দিনে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা। তাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আগামী ২৬শে এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের নতুন দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ৮৭ বার পেছায়।