জিয়া চ্যারিটেবল মামলা: দুমাসের মধ্যে পেপারবুক প্রস্তুতের নির্দেশ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত কারাবন্দি আসামি ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সহকারী একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে জামিনের বিষয়ে আদেশ দেননি হাইকোর্ট। জামিন না দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ তাকে দুই মাসের মধ্যে এই মামলার ওপর আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার (৪ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি জাগোনিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। আদালতে এদিন জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি। এ মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের সাত নম্বর কক্ষে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৫ এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান (বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে তাকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সাজা হয়েছে মামলার অপর তিন আসামিরও।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেনখোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। পরে পলাতক হারিছ চৌধুরী ছাড়া বাকি আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর থেকে মনিরুল ইসলাম খান জেল কারাগারে রয়েছেন। আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, এর মধ্যে খালেদা জিয়া ও জিয়াউল ইসলাম মুন্না এ মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা মোতাবেক নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করার পর মুক্তি পান। কিন্তু মনিরুল ইসলাম খান এখনো কারাবন্দি আছেন। তিনি জামিন চেয়েছেন। আদালত জামিন না দিয়ে দুই মাসের মধ্যে আপিল শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। পেপারবুক প্রস্তুত হলে এ মামলায় খালেদা জিয়ার আপিলও একসঙ্গে শুনানির জন্য আবেদন করবো।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
তদন্ত শেষে ২০১২ সালে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলে দুদকের পক্ষে এই মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর রায় ঘোষণা করা হয়। মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মরহুম মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সহকারী একান্ত সচিব প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পে–অর্ডার করার জন্য মেট্রোমেকার্স ডেভেলপমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এফ এম জাহাঙ্গীর সাহায্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখায় যান। পাঁচটি পে–অর্ডারের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অ্যাকাউন্টে অবৈধভাবে সংগৃহীত মোট এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করে দণ্ডবিধির ১০৯ ধারার অপরাধ করেছেন।