আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

রোহিঙ্গা নির্যাতনকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
লোকসমাজ ডেস্ক॥ রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো সহিংসতা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দেশটিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হবে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন সোমবার ওয়াশিংটনের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম পরিদর্শন করবেন। সেখানে রোহিঙ্গাদের ওপর একটি প্রদর্শনী হচ্ছে। এ সময় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে, তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। দায়িত্ব গ্রহণ ও এ বিষয়ে পর্যালোচনা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ১৪ মাস পর কোনো সিদ্ধান্ত দিতে যাচ্ছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এই প্রথম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর সহিংসতাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৮ সালের জাতিসংঘের একটি ‘ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন’ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সামরিক অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কাজ’ অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে উল্লেখ করে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে অন্তত ১১ লাখ রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মিয়ানমারে সামরিক দমন-পীড়নের ফলে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রোহিঙ্গা প্রবেশ করে।

সময়সীমা পার হলেও আত্মসমর্পণ করেনি মারিউপোল
লোকসমাজ ডেস্ক॥ বন্দরনগরী মারিউপোলকে আত্মসমর্পণের জন্য সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল রুশ বাহিনী। কিন্তু ইউক্রেন তা প্রত্যাখ্যানের পর ইতিমধ্যে চূড়ান্ত সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। খবর সিএনএন। এ শহরে যুদ্ধের আগে সাড়ে চার লাখের মতো বাসিন্দা ছিলেন। মার্চের শুরু থেকে রুশ বাহিনীর কাছ থেকে ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হয়ে অনেকে মারিউপোল ছেড়েছে। আবাসিক এলাকায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ধ্বংসের প্রমাণ পাওয়া গেছে স্যাটেলাইট চিত্রে। আর্ট স্কুল থেকে শুরু করে থিয়েটার, ইস্পাত কারখানাসহ বিভিন্ন স্থানে আক্রমণ করেছে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রস্তাব অনুযায়ী, আত্মসমর্পণ করলে যারা শহর ত্যাগ করতে চায় তাদের নিরাপদে যেতে দেওয়া হবে। তবে অন্যদের বিষয়ে তারা কোনো নিশ্চয়তা দেয়নি। আগেই রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে মারিউপোলে বারবার বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ আনা হয়। আটকে পড়া বাসিন্দারা ওই আক্রমণকে ‘নরক’ বলে বর্ণনা করেছেন। শহরটিতে হামলার ফলে মৌলিক সব সেবা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। বাসিন্দারা গ্যাস, বিদ্যুৎ বা পানির সংযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। এমনকি সৎকারের কেউ না থাকায় বা বিপজ্জনক পরিস্থিতির কারণে মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রাখা হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা জানান, বাসিন্দারা ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ছেড়ে যেতে ভয় পাচ্ছে। তারা কম পরিমাণ পানি ও খাবার খেয়ে কোনোরকমে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। মারিউপোল কৌশলগত বন্দর হওয়ায় শুরু থেকেই রাশিয়ার নজরে ছিল। এটি ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সঙ্গে দনবাসের পূর্ব অঞ্চলকে সংযুক্ত করা উপকূলের একটি প্রসারিত অংশে অবস্থিত। ওই দুই অঞ্চল ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মারিউপোল নিয়ন্ত্রণ করা গেলে যাদের মধ্যে একটি স্থল করিডর তৈরি হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা আমলে না নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। এর পর থেকে দেশটির বিস্তৃত অংশ ভ্লাদিমির পুতিনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে।