যশোরের পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর মামলা দায়ের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর পুলিশ লাইনে কর্মরত কনস্টেবল সাকিব খানের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী তাবাচ্ছুম সুইটি যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করেছেন। গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি যশোর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ মামলাটি দায়ের করেন। অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল বাগেরহাটের চিতলমারী থানার হাড়িয়ার ঘোপ গ্রামের বাবুল হোসেন খানের ছেলে। ভুক্তভোগী তাবাচ্ছুম সুইটি মনিরামপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের মেয়ে এবং মনিরামপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী।
মামলা সূত্রে এবং ভুক্তভোগী তাবাচ্ছুম সুইটির অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১৯ সালের শেষের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরেই দুজনের মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাকিব খান বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিকাকে যশোর শহরের একটি স্থানে কথিত মামার বাসায় এনে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে তিনি প্রেমিকাকে বিয়ে করেন। তাকে বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে শ্বশুর বাড়িতে অবাধে যাতায়াত করলেও স্ত্রীকে বাগেরহাটে স্বামীর বাড়িতে নিতে টালবাহানা শুরু করেন। বিয়ের পর সাকিব খান নানা অজুহাতে সাড়ে চার লাখ টাকা যৌতুক নেন। এক পর্যায়ে তিনি স্ত্রীর সাথে সকল যোগাযোগ ছিন্ন করেন এবং তার ভরণপোষণ পর্যন্ত দেওয়া বন্ধ করে দেন। এরই মধ্যে গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর সুইটি স্বামীর কাছ থেকে তালাকনামা পান। এদিকে, স্ত্রীকে তালাক প্রদান করলেও তিনি কাবিন ও যৌতুকের টাকা ফেরত দেননি। পরবর্তীতে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সুইটি।
এদিকে, আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামানকে দায়িত্ব দেন। ভুক্তভোগীর অভিযোগ রোকনুজ্জামান নোটিশের মাধ্যমে দুই পক্ষ তার কার্যালয়ে হাজির হতে বললেও আসামি সাকিব হাজির হননি। তাছাড়া রোকনুজ্জামান বাদীর পরিবারের কাছে ৩০ হাজার টাকা উৎকোচ দাবি করেন। সেই উৎকোচ না দেওয়ায় সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান কোনপ্রকার সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই একটি মিথ্যা প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছেন। ভুক্তভোগী সুইটির অভিযোগ, যে কোনোভাবেই হোক অভিযুক্ত সাকিবকে বাঁচানোর জন্যে রোকনুজ্জামান একপক্ষীয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ওই প্রতিবেদনে বাদী ও সাক্ষীদের যথাযথ জবানবন্দি সংযুক্ত করা হয়নি। ভুক্তভোগী তাবাচ্ছুম সুইটি দাবি তার সাবেক স্বামীর যথাপোযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। একই সাথে সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামানের বিচার দাবি করেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাকিব খান বলেন, তাবাচ্ছুম সুইটির অভিযোগ সত্য নয়। সে আমাকে ব্লাকমেইল করে বিয়ে করতে বাধ্য করে। আমি আদালতের মাধ্যমে তাকে তালাক প্রদান করেছি। সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। কারও কাছ থেকে আমি কোন আর্থিক লেনদেন করিনি।