যশোরে বাফার গুদামে নকল সন্দেহে সার জব্দের ঘটনা স্পর্শকাতর, বলছে তদন্ত কমিটি

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ড্রাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের যশোরের বাফার গুদামে নকল সন্দেহে জব্দ হওয়া ৫ ট্রাক টিএসপি সারের বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন খুব দ্রুতই দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান। বিষয়টি গুরুতর ও স্পর্শকাতর বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন তিনি। রবিবার চট্রগ্রাম থেকে তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি যশোরে এসে জব্দ হওয়া সারের নমুনা সংগ্রহ করে চট্রগ্রামে বিসিআইসি ল্যাবে পরীক্ষার জন্য জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবার ল্যাবের পরীক্ষার ফলাফল পাওয়ার পর বুধ বা বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন টিএসপি কমপ্লেক্সের উপ প্রধান রসায়নবিদ মো. রেজাউল হক।
প্রসঙ্গত, ১৭ মার্চ সৈয়দ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্রগ্রামের পতেংগা টিএসপি সার কারখানা থেকে সার উত্তোলন করে যশোর শহরতলীর বাহাদুরপুরস্থ বাফার গোডাউনে খালাসের জন্য পাঠানো হয়। এসময় সারের মান নিয়ে সন্দেহ হলে গোডাউন ইনচার্জ তা খালাস বন্ধ করে দেন। পরে তিনি এ বিষয়ে বিসিআইসিতে লিখিত আবেদন করলে তাৎক্ষণিক তিন সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্রগ্রাম থেকে যশোরে পাঠানো হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান টিএসপি কমপ্লেক্সের উপপ্রধান রসায়নবিদ মো. রেজাউল হক, তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক শফিকুল কবির ও তদন্ত কমিটির সদস্য বিসিআইসি ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) নির্মল কুমার দত্ত রবিবার যশোরে এসে ৫ টি ট্রাকের চালকসহ সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এসময় তদন্ত কমিটির সদস্যরা ট্রাকে থাকা টিএসপি সারের নমুনা করে পরীক্ষার জন্য চট্রগ্রামে নিয়ে যান। তদন্তের সর্বশেষ তথ্য জানতে সোমবার সন্ধ্যায় লোকসমাজের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির প্রধান টিএসপি কমপ্লেক্সের উপপ্রধান রেজাউল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়টি সিরিয়াসলি নিয়ে তাৎক্ষণিক যশোরে সরেজমিনে যাই। সেখানে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেছি। সারগুলো নকল কিনা সেটি নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করে তা ল্যাবে পরীক্ষার জন্য জমা দেয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন সেকারণে আপাতত এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারবো না। তবে মঙ্গলবার এ বিষয়ে ল্যাব থেকে রিপোর্ট পাবো বলে আশা করছি। পরীক্ষার ফল পেলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা খুব স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছি। এর সাথে বিসিআইসি, টিএসপি কমপ্লেক্সসহ সরকারের ভাবমূর্তি জড়িত রয়েছে। সরকার দেশের কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে নানা যুগান্তকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অবস্থায় এমন ঘটনা মোটেও কাম্য নয়। এর সাথে কারা কারা জড়িত তা খতিয়ে দেখার বিষয়টি শক্তিশালী হয়ে দেখা দিয়েছে। তবে যেহেতু কেমিক্যাল পরীক্ষা করা হচ্ছে সেহেতু ল্যাবের ফলাফল পেতে বিলম্ব হলে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরও সময়ের জন্য আবেদন করতে হতে পারে বলেও তিনি জানান। এ বিষয়ে সোমবার রাতে যশোর বাহাদুরপুর বাফার গোডাউনের ইনচার্জ আক্তারুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, জব্দকৃত সার বোঝাই ট্রাকের চালকরা সবাই পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ এলাকার বাসিন্দা। তারা গাড়ির যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে রোববারই নিজ এলাকায় চলে গেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে যেকোনো সময় ডাকা হতে পারে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।