অভিভাবকদের অসন্তুষ্টি: যশোর কালেক্টরেট স্কুলে মাদক ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠান

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর কালেক্টরেট স্কুলে সোমবার আয়োজন করা হয় মাদক ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ এবং নৈতিক-মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত শীর্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে মতবিনিময় ও শপথ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলো ‘লাল সবুজ উন্নয়ন সংঘ’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। স্কুলটির নবম ও দশম শ্রেণির অন্তত ২শ শিক্ষার্থী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। তবে হঠাৎ এ আয়োজন নিয়ে মিশ্র-প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কিছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মাদ মনোয়ার হোসেন। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. মোদাচ্ছের হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম গোলাম , যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির নবম ও দশম শ্রেণির ২শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। মতবিনিময় সভায় ও শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শপথ পাঠ করান শিক্ষার্থীদের। উন্নত চরিত্র গঠন, মাদক, বাল্য বিবাহ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ, দুর্নীতি,বাল্যবিবাহকে লাল কার্ড ও ভালো কাজকে সবুজ কার্ড প্রদর্শন করার বিষয়ে অঙ্গীকার করেন শিক্ষার্থীরা।
তবে সম্প্রতি যশোর কালেক্টরেট স্কুলে হঠাৎ হঠাৎ বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের সেখানে উপস্থিতি বাধ্যতামূলক নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন একাধিক অভিভাবক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসব অভিভাবকদের মধ্যে এক জন বলেন, ছুটির সময় যেয়ে দেখা গেল সকলে হল রুমে। এসময় কর্মব্যস্ত অভিভাবকদের বেকায়দায় পড়তে হয়। কোন আয়োজন থাকলে আগেভাগে জানানো উচিৎ।
অপর এক অভিভাবক বলেন, ছুটির পর কেউই থাকতে চায় না বিদ্যালয়ে। আবার সম্প্রতি এ বিদ্যালয়ে এমন সব প্রতিষ্ঠান এসে ইচ্ছা মতো অনুষ্ঠান করে তাতে শিক্ষার্থীদের কোন আকর্ষণ থাকে না। তাদেরকে জোর করে আটকে রাখা হয়। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে হামদর্দ নামে একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে ছুটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে কী বলেছে তা তার সন্তানের বোধগম্য হয়নি। অপর এক অভিভাবক বললেন, তিনি তার সন্তানের কাছে জানতে চেয়েছিলেন কী করেছে লাল সবুজ নামে ওই প্রতিষ্ঠান? উত্তরে তার সন্তান বলেছে, অভিনয়ের ঢঙে চিৎকার করে এক জন কী বললেন তা তারা বুঝতে পারেনি। এটুকু বুঝেছে ওই ব্যক্তি কী করে তার প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছে তার কাহিনী বলছেন।
এ অভিভাবক বলেন, যশোর কালেক্টরেট স্কুল বর্তমানে যশোর শহরে মান সম্পন্ন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুপরিচিত। সেখানে ওষুধ কোম্পানি বা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মানহীন নানা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা ও সেই আয়োজনে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা প্রয়োজন রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন, স্কুলের অধ্যক্ষ মো. মোদাচ্ছের হোসেন। তিনি বলেন, সব প্রোগ্রামের ব্যাপারেই শিক্ষার্থীদের আগের দিন জানিয়ে দেওয়া হয়। আর স্কুলের মিলনায়তনে কোনো ভুঁইফোড় সংগঠনের জন্য প্রোগ্রাম করার অনুমতি দেওয়া হয় না। যেসব অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষনীয় বিষয় থাকে সেখানেই তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার কোনো বিঘœ ঘটে বলে আমার মনে হয় না।