দত্তনগর বাজারের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটর ঘর রাতারাতি বিক্রি করে দিয়েছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট

0

জিয়াউর রহমান জিয়া,মহেশপুর (ঝিনাইদহ)॥ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর বাজারে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট সরকারী জমি দখল করে দোকান ঘর নির্মান করে রমরমা বানিজ্য চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই চক্রটি সরকারী জমির উপর গড়ে ওঠা মার্কেটের দোকান ইচ্ছামতো বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ইতিমধ্যে দত্তনগর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট নামে পরিচিতি মার্কেটের দুইটি ঘর ২৩ লাখ টাকা বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে বলেও বাজারে গুনঞ্জুন চলছে। এই নিয়ে মহেশপুরের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে ক্ষোভ ও অসোন্তষ ছড়িয়ে পড়েছে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ১০/১২ বছর আগে বাজারের একটি প্রভাবশলী সুবিধাবাদী চক্র বিএডিসির জমি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার করেন। এই নামের প্রতি প্রশাসনের সম্মান থাকায় চক্রটি জমিটি দখলে নেয় সহযেই। গড়ে ওঠে ৪৪ জনের একটি সিন্ডিকেট। এই কমিটিতে ১৯ জন মুক্তিযোদ্ধা রাখা হয়। বাকীরা সব অমুক্তিযোদ্ধা। ২০১৫ সালে মার্কেট নির্মান করে ৪ জনকে ভাড়া দেওয়া হয়। এই ঘরের ভাড়ার টাকা ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়ে থাকে। নতুন করে এই মার্কেটের দুইটি ঘর আব্দুল হালিম ও জুবায়েরের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ২৩ লাখ টাকায়। ফলে আগের ভাড়াটিয়াদের ২৮ ফেব্রয়ারির মধ্যে ঘর ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ঘর ছাড়তে বলায় ভাড়াটিয়া পড়েছেন মহা বিপাকে। এতো টাকা দিয়ে তাদের দোকানের পজিশন কেনার ক্ষমতা নেই।
তথ্য নিয়ে জানাগেছে, এক সময় বিএডিসির এক একর জমিতে দত্তনগর বাজার গড়ে ওঠে। আস্তে আস্তে বাজারটি এখন তিন একর জমির উপর। বাজারের অনেকেই ডিসিআর কেটে ব্যবসা করলেও বেশির ভাগ অবৈধ দখলদার রয়েছে। সরকার তাদের কাছ থেকে কিছুই পায়না। প্রভাবশালী মহলটি সরকারী হাটের জমি দেদারছে বেচাকেনা করে যাচ্ছেন। কিন্তু মহেশপুর উপজেলা প্রশাসন ও স্বরুপপুর ভুমি অফিস একেবারেই নির্বিকার বলে বরাবরের মতই এবারও অভিযোগ উঠেছে। বাজারটির জমি এখন সরকারের নামে রেকর্ড বলে জানান ব্যবসায়ীরা। স্বরুপপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান জানান, প্রথমে মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এই মার্কেটের কমিটি গঠিত হয়। এতোদিন তারাই নিয়ন্ত্রন করে আসছিল। এখন লোকমুখে শুনছি মার্কেটের দোকান বিপুল অংকের টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি মার্কেট কেনাবেচার মতো অন্যায় কাজের ঘৃনা করি বলে তাদের সঙ্গে আমার এখন আর কোন যোগাযোগ নেই।
পৌর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজি আব্দুস সাত্তার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি স্বরুপপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান কাছ থেকে সব কিছুই সুনেছি। কয়েক দিনের মধ্যে আমি আমার বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাইদের ডেকে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যা করার তাই করব। দত্তনগর বিএডিসির উপ-পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, সরকারী জমির উপর গড়ে ওঠা মার্কেট বেচাকেনা কার্যত অবৈধ। যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারেন। এই জমি এক সময় বিএডিসির ছিল, এখন জেলা প্রশাসক ঝিনাইদহের নামে রেকর্ড। সবকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আনিসুল ইসলাম জানান, জমিটি যদি জেলা প্রশাসকের নামে রেকর্ড হয় তাহলে ঘর গুলোও জেলা প্রশাসকের নামে হওয়া উচিৎ। তবে সরকারী জমিতে মার্কেট তুলে কারো বিক্রি করার সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি স্থানীয় ভূমি অফিসের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে যারা বেচা কেনা সাথে জরিত তাদের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।