চৌগাছা পৌরসভার সড়কগুলে অবৈধ যানের দখলে বাড়ছে দূর্ভোগ॥ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলাবাসির দূর্ভোগের অপর নাম হচ্ছে অবৈধ যানবাহন। উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ গ্রামাঞ্চলের সড়ক সর্বত্রই এসব যানের দখলে থাকে। শুধু দখল না, যত্রতত্র পাকিং, যাত্রী উঠা নামা করা আর অদক্ষ চালক দিয়ে যান চলাচলের কারনে বাড়ছে দূর্ঘটনা। এ সব যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলাবাসি। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সীমান্তবর্তী উপজেলা চৌগাছাতে বাড়ছে মানুষ, বেড়েছে ব্যবসা বানিজ্যসহ সব কিছুর পরিধি। বিশেষ করে ২০০৪ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া চৌগাছা উপজেলা সদরকে পৌরসভা ঘোষনা করার পর আমুল পরিবর্তন ঘটে এখানে। এরপর চৌগাছার বিশিষ্ঠ শিল্পপতি রায়হীন উদ্দিন চৌগাছাতে গামের্ন্টস সহ একাধিক শিল্প কলকারখানা গড়ে তোলায় ব্যস্ততম উপজেলা হিসেবে এর পরিচিতি বৃদ্ধি পাই।
স্থানীয়রা জানান, গত পাঁচ বছরে চৌগাছা উপজেলাতে যে ভাবে মানুষের বসবাস বেড়েছে তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে ছোটখাটো যানবাহন। বিশেষ করে ইজিবাইক, ব্যাটারী চালিত ভ্যান, থ্রি-হুইলার ও নছিমন, করিমনের সংখ্যা কয়েকগুন বেড়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন দাড়িয়েছে যে অবৈধ যানবাহনের কারনে সাধারণ পথচারী অসহায় হয়ে পড়েছে। মানুষের তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা এখন অনেক গুন বেড়েছে। সড়ক থাকে তাদের দখলে, সড়কে চলার সময়ও তাদের মধ্যে চলে অসম প্রতিযোগীতা, যার কারনে দূর্ঘটনা লেগেই আছে। বাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, নারায়ন চন্দ্র, কবির হোসেন, হোসেন আলী, আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা সকলেই ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমরা দোকনে আসার আগেই ভ্যান ইজিবাইকে সড়ক ভরে যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে এর সংখ্যা। এক সময় তাদের দখলে চলে যায় সড়ক, সাধারণ পথচারীরা পড়েন মহাবিপাকে। বাজারে এসব যানবাহন রাখার নিদিষ্ঠ কোন জায়গা না থাকার কারনে তারা সড়কের পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে যত্রতত্র পাকিং করে। এতে করে ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। এ নিয়ে চালকদের সাথে কথা বললে তারা অহেতুক তর্কে জড়িয়ে পড়ে, যার কারনে এখন ব্যবসায়ীরা চালকদের সাথে আর সে ভাবে কথা বলতে চাইনা।
স্বর্ণপট্টির সম্মুক ভাগের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, স্বর্ণপট্টির প্রধান গলির মুখ থেকে শুরু করে চৌগাছা মেইন বাসষ্টান্ড পর্যন্ত সড়কটি সারাক্ষনই ইজিবাইকের দখলে থাকে। চার রাস্তার মোড় হওয়ার কারনে এখানে মানুষের উপস্থিতি থাকে বেশি। প্রায় দিনে এখানে ঘটে দূর্ঘটনা। ইজিবাইক ও ভ্যানের যততত্র পাকিং এর কারনে ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। পথচারী রফিকুল ইসলাম, হায়দার আলী বলেন, ব্যাটারী চালিত ভ্যান ও ইজিবাইকের কারনে মানুষ যেমন উপকৃত হয়েছে, তার চেয়ে মানুষকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। এসব যানবাহনের চালকদের বড় একটি অংশ অদক্ষ, তারা এর আগে মাঠে জোন বা কোন না কোন শ্রমিকের কাজ করত। সমাজের কিছু বৃত্তবান মানুষ ভ্যান ইজিবাইক কিনে দিন চুক্তিতে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। চালকরা সড়কের কোন নিয়ম কানুন মানে না, অনিয়মই যেন তাদের কাছে নিয়মে পরিনত হয়েছে। ইজিবাইক, ভ্যান ও থ্রি-হুইলারের লাগাম এখনই টেনে না ধরতে পারলে চরম ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। চৌগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, পৌর এলাকায় যত্রতত্র চলাচল ও পার্কিং করা সব ধরনের অবৈধ যানের বিরুদ্ধে দ্রুতই একটি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।