৫ বছর মেয়াদে বাড়ছে আমদানির সনদ নবায়নের সুযোগ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পাঁচ বছর মেয়াদে সনদ নবায়নের সুযোগ রেখে ২০২১-২০২৪ সাল মেয়াদী নতুন আমদানি নীতির খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে নিবন্ধন ও নবায়ন ফি কমানোর প্রস্তাব থাকবে। নিষিদ্ধ হচ্ছে ক্যাসিনো বা জুয়া খেলার পণ্যসামগ্রী আমদানি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে আমদানির জন্য প্রাথমিক সনদের সর্বনিম্ন নিবন্ধন ফি পাঁচ হাজার টাকা থেকে ৬০ হাজার টাকা ধার্য রয়েছে। বার্ষিক নবায়ন ফি দিতে হয় তিন হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। নতুন আমদানিনীতিতে সর্বনিম্ন প্রাথমিক নিবন্ধন ফি কমিয়ে তিন হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়াও বার্ষিক নবায়ন ফি দুই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রতি বছর নবায়নের ঝামেলা নিরসনে পাঁচ বছরের জন্য নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে আমদানি নীতিতে। এ জন্য সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নিবন্ধন ফি প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আমদানি নীতিতে একজন আমদানিকারককে প্রতি বছর আমদানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হয়। তবে নতুন নীতিমালায় পাঁচ বছর পরপর নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। শিগগিরই নতুন আমদানি নীতি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগামী আমদানি নীতি হবে ২০২১-২০২৪ সাল মেয়াদী। ছয় বছর পর নতুন আমদানি নীতি ২০২১-২০২৪ আসছে। বিদ্যমান আমদানি নীতি ২০১৫-২০১৮ এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নতুন আমদানি নীতি প্রণীত হয়নি। ফলে এই আমদানি নীতিই এখনো বহাল রয়েছে। প্রস্তাবিত আমদানি নীতিতে জালিয়াতির মাধ্যমে নিবন্ধন সনদ গ্রহণ ও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সম্পন্ন করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
সূত্র জানায়, গত এক যুগে দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় শিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে। বড় হয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের আকার। এসব কিছু বিবেচনায় রেখে বৈশ্বিক অঙ্গনের সঙ্গে আগামী তিন বছর দেশের আমদানি বাণিজ্য কোন মানদণ্ডে পরিচালিত হবে তার রূপরেখা থাকবে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রস্তুতি এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষমতা বাড়াতে নতুন নীতি আদেশে ব্যবসায়ীদের জন্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা। এতে আমদানি সহজ করার মাধ্যমে রপ্তানি বাড়ানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে।
খসড়া নতুন আমদানি নীতিতে পাঁচটি শ্রেণিতে নিবন্ধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বার্ষিক আমদানিসীমা পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা এবং পরে অনূর্ধ্ব ৫০ লাখ টাকা, অনূর্ধ্ব এক কোটি টাকা, অনূর্ধ্ব পাঁচ কোটি টাকা ও পাঁচ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে এ পাঁচটি ভাগে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান নীতিতে আমদানিকারকদের বার্ষিক আমদানির পরিমাণ পাঁচ লাখ টাকা থেকে পাঁচ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে পর্যন্ত মোট ছয়টি শ্রেণিতে নিবন্ধন সনদের সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া বর্তমান নিয়মে আমদানি ঋণপত্র খোলার পর ঋণপত্রের কপি ১৫ দিনের মধ্যে আমদানি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। নতুন নিয়মে ডিজিটাল মাধ্যমে জমা দিলেই চলবে। বর্তমান আমদানি নীতিতে সংশ্লিষ্ট আমদানি-রপ্তানি দপ্তরাধীন এলাকার মধ্যেই শুধু ঋণপত্রের মনোনীত ব্যাংক পরিবর্তনের সুযোগ আছে।
তবে নতুন আমদানি নীতিতে আমদানিকারকের জন্য তার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো ব্যাংক পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়েছে। অন্য দিকে এলসির পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে আমদানিকারক পণ্য আমদানি করতে পারবেন। ফলে যে কেউ সহজেই বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানির সুযোগ নিতে পারবেন। বিশেষ করে গার্মেন্ট খাতের ব্যবসায়ীদের নমুনা আমদানি সহজ করা হয়েছে।
নতুন আমদানিনীতিতে সংশ্লিষ্ট ধারায় সংশোধনী এনে পুরনো কাপড় আমদানির পথ সঙ্কুচিত করা করার কথা বলা হয়েছে, যা ২০২৬ সালের পর শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ পরবর্তী আমদানিনীতি আদেশ ২০২৪-২০২৭ এ স্থায়ীভাবে বন্ধ হবে পুরনো কাপড় আমদানি।
সূত্র জানায়, নতুন আমদানি নীতিতে দেশে পুরনো মোটরসাইকেল আমদানি নিষিদ্ধ হচ্ছে। এছাড়া কোনো আমদানিকারক ব্লুটুথ অ্যানাবেল টেকনোলজি সংবলিত মোটরসাইকেল আমদানি করতে চাইলে তাকে আগে থেকেই বিটিআরসির অনুমতি নিতে হবে। থাকতে হবে অনুমোদিত সার্টিফিকেটও।