ঝিকরগাছা পৌরসভার পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবিতে তিন মেয়র ও ১০ কাউন্সিলর প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ৩ মেয়র ও ১০ কাউন্সিলর প্রার্থী। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এর আগে রোববার(১৬ জানুয়ারি) ঝিকরগাছা পৌরসভা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এক হাজার ২০১ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। কিন্তু একটি কেন্দ্র নিয়ে মামলা জটিলতার কারণে ফলাফল প্রকাশ স্থগিত রাখা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত তিন পরাজিত মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন ছেলিমুল হক সালাম। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ভোট চলাকালে বেলা ১টার পর নৌকা প্রতীকের মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালের সন্ত্রাসী বাহিনী প্রত্যেকটা ভোট কেন্দ্রে ঢুকে প্রকাশ্যে বলেছেন ‘এখন থেকে ভোট সব নৌকায় দিতে হবে এবং ইভিএম মেশিনের পাশে দাঁড়িয়ে জোর করে ভোট নিয়েছেন। সেই সময় আমার পোলিং এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিয়েছে।’ লিখিত অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, পৌর সভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিএম হাই স্কুলে ৪টা ৫ মিনিটে আমি কেন্দ্রে ঢুকে দেখি তার পোলিং এজেন্ট বাইরে, ওরা বলছে ‘আমাদের বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে।’ নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় ভোট গ্রহণের শেষ হওয়ার ৩০ মিনিটি আগে পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ইভিএম মেশিনগুলো একটি কক্ষের মধ্যে নিয়ে মেশিনের কার্ডগুলোর প্রকৃত ফলাফল পরিবর্তন করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তার দাবি পরবর্তীতে পরাজিত প্রার্থীদেরকে যে ভোট দেওয়া হয়েছে তা ফলাফলে সংযুক্ত করা হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরাজিত অন্য প্রার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পদে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম আমানুল কাদির টুল্লু, ইমতিয়াজ আহমেদ শিপন, পরাজিত কাউন্সিলয়র প্রার্থী কলিম হোসেন মৃধা বাবু, নিমাই চন্দ্র ঘোষ, মতিয়ার রহমান, সাইফুল আলম সুজন, আব্দুর রাজ্জাক লিটন, শরিফুল ইসলাম, আজাদ রহমান, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী নাছিমা খাতুন, পপি বেগম ও চিত্রা রাণী কর। এই বিষয়ে জানতে যশোর সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির বলেন, উচ্চ আদালতে রিটের প্রেক্ষিতে ৪ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ পেয়েছেন। তাই ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরাজিত প্রার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। তবে এই বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে চাননি। এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামাল বলেন, স্মরণকালে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে ঝিকরগাছা পৌরসভায়। আইনী জটিলতার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। ১৪টির মধ্যে ১৩টি কেন্দ্রের ফলাফলে এক হাজার ২০১ ভোটে এগিয়ে আছি। একটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করেছে আদালত। ওই কেন্দ্রে এক হাজার একশ’র মত ভোট কাস্ট হয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মেয়র পদে ৬ জন, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৬৬ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ ভোট দিয়েছেন ভোটাররা।