শৈলকুপায় হত্যা মামলার আসামি পেলেন নৌকার মনোনয়ন!

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) আগামী ৭ ফেব্র“য়ারির সপ্তম ধাপের নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন হত্যা মামলার আসামি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। শৈলকুপা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ ইসলাম জাহিদ শৈলকুপার উকিল মৃধা হত্যা মামলার ২৪ নং আসামি। তবে তিনি এ মামলায় জামিনে আছেন। হত্যা মামলার আসামি নৌকার মনোনয়ন পাওয়ায় দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তৃণমূলে বিভেদ ও দ্বন্দ্ব ছড়িয়ে পড়েছে। ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগেও। প্রতিপক্ষরা জাহিদের মনোনয়ন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। মনোনয়ন বোর্ডের কাছে করা হয়েছে আপিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার দামুকদিয়া গ্রামে গত বছরের ২৫ জুলাই সামাজিক দলাদলির জের ধরে রাশিদুল ইসলাম ওরফে উকিল মৃধা (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ কর্মী খুন হন। হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। উকিল মৃধা হত্যার জন্য আওয়ামী লীগের জাহিদ গ্রুপকে দায়ী করেন নিহতের ভাইপো আজমীর শরীফ। তিনি জানান, গত বছরের ২৩ জুলাই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রামে মারামারি হয়। বিষয়টি মীমাংসার জন্য ২৫ জুলাই রাতে শৈলকুপা থানা পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বৈঠক শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য তানিয়াা খাতুন ২৬ জুলাই ২৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় নৌকার মনোনয়নপ্রাপ্ত যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ২৪ নং আসামি। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন ও সম্পাদক আব্দুর রশিদ জানান, খুনের মামলার আসামিকে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলে বিভেদ ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে নৌকার মনোনয়ন পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মনোহরপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু। তিনি নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আরিফ রেজা মন্নু বলেন ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি অধ্যক্ষ কামরুজ্জামানের হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯৮ সালে বিএনপির শক্তিশালী ইউপি প্রার্থীকে হারিয়ে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য থাকার পর ২০১৫ সালে ডেলিগেটদের সরাসরি ভোটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। জাহিদের ভাষ্য, মনোহরপুর ইউনিয়নের তৃণমূলসহ সাধারণ ভোটারদের ৯৫ ভাগ তার সঙ্গে আছেন। তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেন। কোনো ষড়যন্ত্র তাকে দমাতে পারবে না। উল্লেখ্য সপ্তম ধাপে অনুষ্ঠিত শৈলকুপার মনোহরপুর ইউনিয়নে আগামী ৭ ফেব্রয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।