শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড পেলেন মণিরামপুরে গরিবের ডাক্তার খ্যাত মেহেদী হাসান

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর (যশোর)॥ করোনার প্রাদুর্ভাবে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা না পেয়ে মানুষ যখন দিশেহারা হয়ে পড়েন, তখন মণিরামপুরে গরিবের ডাক্তারখ্যাত মেহেদী হাসান নিরন্তর ছুটে চলেন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে। তার এই ছুটে চলা শুধু মণিরামপুরেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি মণিরামপুরের পাশাপাশি টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে সারাদেশের আক্রান্তদের বিনামূল্যে রাত-দিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। গরিবের ডাক্তার মেহেদী এ পর্যন্ত নয় হাজার করোনা আক্রান্ত রোগীকে টেলিমেডিসিনের আওতায় চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন।  তার এই অনবদ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডা.মেহেদী হাসানকে ‘অ্যাক্ট অব ব্রেভারি’ ক্যাটাগরিতে ‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। মেহেদী হাসান বর্তমানে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগে কর্মরত।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশে করোনা মহামারিতে অনন্য মানবিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল ২০২০’-এর অধীন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং ইসলামিক কো-অপারেশন ইয়ুথ ফোরাম (আইসিওয়াইএফ), ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।  বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। এসময় বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান। এ সময় অনান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.একে আব্দুল মোমেন, রুশ ফেডারেশনের তাতারস্থান প্রজাতন্ত্রের যুব বিষয়ক মন্ত্রী তিমুর সুলেইমানোভ, মালদ্বীপের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী আহমেদ মাহলুফ, আইসিওয়াইএফ সভাপতি তাহা আয়হান প্রমুখ। ১০টি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে ডা.মেহেদীসহ ১০জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এর মধ্যে মেহেদীকে দেওয়া হয়েছে অ্যাক্ট অব ব্রেভারি’ ক্যাটাগরিতে। মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের আগরহাটি গ্রামের হাজী জবেদ আলীর ছোট ছেলে ডা. মেহেদী হাসান লেখাপড়া করেছেন ইউক্রেনের টার্নোপিল ন্যাশনাল মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৪ সালে যোগ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই থেকে তিনি চাকরির পাশাপাশি নিজ এলাকার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। করোনাকালে ভয়কে উপেক্ষা করে ডা. মেহেদী প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় এসে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। ডা. মেহেদী হাসান জানান, করোনাকালে শুধু টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে ২০ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। নয় হাজার করোনা রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন। ঢাকাতেও বিশেষ করে অ্যাডমিন (প্রশাসন) ক্যাডারসহ ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে তিনি চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। পারিবারিক অনুপ্রেরণা থেকেই তিনি সবসময় মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করছেন। ডা. মেহেদী হাসানের অনবদ্য অবদানের জন্য ২০২০ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার অফিস এবং ৬ ডিসেম্বর ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।