নৌকা ও ট্রলারে চাঁদাবাজি করায় নাম হয় জলদস্যু কবির

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বুড়িগঙ্গা ও তুরাগে নৌকা ও ট্রলারে চাঁদাবাজি করায় তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়ে জলদস্যু কবির নামে। এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার অন্যতম হোতা কবির। গত ১২ নভেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুর নবোদয় হাউজিং এলাকায় একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জলদস্যু কবির ওরফে দস্যু কবির ওরফে গাংচিল কবিরসহ এই চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো—কবির হোসেন ওরফে জলদস্যু কবির ওরফে দস্যু কবির (৪৬), মো. রুবেল ওরফে পানি রুবেল (২৭), মো. আমির হোসেন (২১), মো. মামুন(২৫), মোহাম্মদ রিয়াজ (২০), মেহেদী হাসান (২৫), মো. মামুন ওরফে পেটকাটা মামুন, মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন (২৪)। এসময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি, একটি ছুড়া, একটি চাকু, একটি লোহার পাইপ, চারটি চাপাতি, ৪১৭ পিস ইয়াবা ও ৭টি মোবাইল। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, কবির বাহিনী রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় এক আতঙ্কের নাম ছিল। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন অলিগলিতে তারা এক প্রকার চেকপোস্টের মতো করে বসিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় রিকশা-সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকে ছিনতাই করে আসছিল। এই চক্রে ২০ থেকে ২২ জন সদস্য রয়েছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা জানতে পারি—গত ৩০ নভেম্বর রাতে বাসায় ফেরার পথে তিনি নবোদয় হাউজিং এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন। পরবর্তী সময়ে ১২ ডিসেম্বর র‍্যাব-২ এ অভিযোগ দায়ের করে। পরে গোয়েন্দা তথ্য এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নিজেদের ফেসবুক পেজ থেকে বিভিন্ন অস্ত্রের মহড়ার ভিডিও প্রকাশ করত তারা। মূলত ভাড়াটে এবং অর্থের বিনিময়ে কবির গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে আসছিল।
কে এই কবির
চক্রের মূলহোতা কবির ১৯৯০ সালে পরিবারসহ বরগুনা থেকে ঢাকায় আসে। ঢাকায় আসার পর প্রথমে বাবার সহকারী হিসেবে রাজমিস্ত্রির কাজে সহায়তা করতো। পরে গাড়িচালনা এবং হাউজিং অফিসে চাকরি নেয়। ২০১০ সালে গাংচিল বাহিনীতে যোগ দেয়। এই বাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে তার অপরাধ জগতে হাতেখড়ি‌‌। তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীতে মালবাহী নৌকা ও ট্রলারে চাঁদাবাজি করায় তার নাম হয় জলদস্যু কবির। ২০১৬ সাল থেকে কবির বাহিনী নামে সে নিজেই একটি দুর্ধর্ষ বাহিনী গড়ে তোলে। মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যান, বসিলা চাঁদ উদ্যান—এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে আতঙ্কের নাম ছিল কবির বাহিনী।