মহেশপুরের গ্রামে গ্রামে কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম

0

জিয়াউর রহমান জিয়া, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) ॥ ঝিনাইদহ মহেশপুরের গ্রামে গ্রামে কুমড়ার বড়ি তৈরির ধুম পড়েছে। এই বড়ি তৈরির উপযুক্ত সময় শীতকাল। শীতের সময় গ্রামের নারীদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। মাসকলাই ভিজিয়ে সেই ডালের সাথে পাকা চালকুমড়া মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু বড়ি। শীতের সময় গ্রামের প্রায় ৮০ ভাগ মহিলা পালা করে বড়ি তৈরির কাজটি করে থাকেন। কুমড়া বড়ি তরকারির একটি মুখরোচক খাদ্য। এতে তরকারির স্বাদে যোগ হয় নতুন মাত্রা। মহেশপুর উপজেলার নারীরা এই বড়ি তৈরি করার জন্য বেশ কয়েক মাস আগে থেকে চাহিদা মতো পাকা চালকুমড়ার ব্যবস্থা করেন। কুমড়ার বড়ি তৈরিতে মূলত চালকুমড়া ও মাসকলাইয়ের ডাল প্রয়োজন হয়। মাসকলাইয়ের ডাল ছাড়া অন্য ডালেও তৈরি করা যায় এই বড়ি। মচমচে করে রোদে শুকাতে পারলে এই বড়ির ভালো স্বাদ পাওয়া যায়। এ সময় গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে কমবেশি কুমড়া বড়ি তৈরি করা হয়। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাকিটা বাজারে বিক্রি করেন তারা। শীতের সময় কুমড়া বড়ির চাহিদা থাকে বেশি, আর গ্রামাঞ্চলের নারীরা বাড়তি আয়ের জন্য কুমড়া বড়ি তৈরি করেন। পাতিবিলা গ্রামের হাজেরা বেগম জানান, বড়ি তৈরির আগের দিন ডাল ভিজিয়ে রাখতে হয়। চালকুমড়া ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে মিহিভাবে কুচি করে রাখতে হয়। এরপর কুমড়া খুব ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হয়। অন্যদিকে ডালের পানি ছেঁকে শিলপাটায় বেটে নিতে হয়। বগা গ্রামের ফাতেমা বেগম বলেন, শীতের সময় মূলত বড়ি তৈরি করা হয়। এ বড়ি নিজেদের খাওয়াসহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও পাঠানো হয়। মহেশপুরের কুমড়া বড়ির ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, এখানকার কুমড়া বড়ি খুব সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলাতেও পাঠানো হয়। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাসান আলী জানান, শীত মৌসুমে গ্রামের নারীরা কুমড়ার বড়ি তৈরি করে বাড়তি আয় করছেন। গ্রামীণ নারীরা উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়ন ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।