কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে পর্যটককে ‘দলবদ্ধ ধর্ষণ’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ কক্সবাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসে এক নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। র‌্যাব জানায়, তুচ্ছ ঘটনায় স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে ৩ জন যুবক ওই নারী পর্যটককে ধর্ষণ করে হোটেলে রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ওই পর্যটক দম্পতি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে কক্সবাজার বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবার দিনগত রাত ২টার দিকে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের জিয়া গেস্ট ইন নামের হোটেল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান র‌্যাব-১৫ এর কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান।
ওই নারীর বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গত মঙ্গলবার ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন ওই নারী। ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। সেখান থেকে বিকেলে যান সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে; কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। এ সময় আরেকটি অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নেয় তিন যুবক। পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তিনজন। এরপর তাকে নেয়া হয় জিয়া গেস্ট ইন নামে একটি হোটেলে। সেখানে আরেক দফা তাকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। ঘটনা কাউকে জানালে সন্তান ও স্বামীকে হত্যা করা হবে জানিয়ে কক্ষ বাইরে থেকে বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে তারা। মেজর মেহেদী হাসান আরও বলেন, খবর পেয়ে স্বামী-সন্তান ও গৃহবধূকে উদ্ধার করি। তদন্ত শুরু করেছি। এখন পর্যন্ত তিনজনের মধ্যে দুজনকে শনাক্ত করেছি। দুজন হলেন- কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম ও আব্দুল জব্বার জয়া। থানা সূত্রে জানা যায়, আশিক এলাকায় মাদক ও যৌনকর্মী সরবরাহের কাজ করেন। জয়া তার অন্যতম সহযোগী। ওই এ ঘটনার পর জিয়া গেস্ট ইনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে র‌্যাব। এতে দেখা যায়, তিন যুবক অটোরিকশায় এক নারীকে নিয়ে আসেন। দুজন ওই নারীর সঙ্গে থাকেন। আরেকজন হোটেলের রুম বুকিং দেন। সে সময় রিসেপশনে হোটেলের ব্যবস্থাপক ছোটন ছিলেন। এরপর তিন যুবক ওই নারীকে নিয়ে ওপরে চলে যান। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যুবকেরা বেরিয়ে গেলেও ওই নারীকে নামতে দেখা যায়নি। র‌্যাব জানায়, এই ফুটেজ থেকে দুজনকে শনাক্তের পর ওই নারীকে তাদের ছবি দেখানো হয়। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন। কক্সবাজার সদর মডেল থানার এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর আশিকের নেতৃত্বে কয়েকজন এক যুবককে ছুরিকাঘাত করে সবকিছু ছিনিয়ে নেয়। এই মামলায় তিনি জেলে ছিলেন। প্রায় ৪ মাস আগে জেল থেকে বের হওয়ার পর তাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা যায়। আশিক এলাকায় মাদক ও যৌনকর্মী সরবরাহের কাজ করেন। জয়া তার অন্যতম সহযোগী। তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী নারীকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে। র‌্যাব-১৫-এর কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বলেন, জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তিনি ঘটনার পর পলাতক ছিলেন।