হাফ ভাড়ার প্রজ্ঞাপন জারির দাবি প্রগতিশীল ছাত্র জোটের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সব ধরনের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার বিধান করে প্রজ্ঞাপন জারিসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। রোববার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। এসময় তারা হাফ ভাড়ার দাবিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কথা বলেন। প্রগতিশীল ছাত্র জোটের দাবিগুলো হলো— নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে, জ্বালানি তেলের দাম কমানো এবং বাস-লঞ্চের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার দাবিতে রাস্তায় নেমে এসেছে। দীর্ঘদিনের অসন্তোষ এখন স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোবে পরিণত হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনেও নাভিশ্বাস, কারণ দ্রব্যমূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় চাল, চিনি, তেলসহ খাদ্যপণ্য তো আছেই, রান্নার গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সব কিছুর দামই বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের আবদার এবং সরকারের অনুমোদন একটা যুগলবন্দির মতো পরিবেশ তৈরি করেছে। পরস্পর পরস্পরকে সহায়তা করে সরকার ও ব্যবসায়ীদের এই যৌথ সংগীতের মূর্ছনায় সাধারণ মানুষের মূর্ছা যাওয়ার উপক্রম। এরই মধ্যে সরকার আবার ডিজেল, কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা এবং ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারপ্রতি ৩ টাকা বাড়িয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়ছে এ কথা বলে মূল্য সমন্বয়ের নামে সরকার এই মূল্যবৃদ্ধি করলো। কিন্তু সরকারের এ সিদ্ধান্তের পর থেকেই বিশ্ববাজারে তেলের দাম আবার কমতে শুরু করেছে। এখন আর সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। আবার বলা হয়েছে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকলে সব তেল ভারতে পাচার হয়ে যাবে। কিন্তু সীমান্ত রক্ষায় দায়িত্ব যাদের তাদের সতর্ক না করে শাস্তি দিলেন সাধারণ মানুষকে। তারা বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈমের মৃত্যুর হৃদয়বিদারক ঘটনা নিশ্চয়ই আপনি প্রত্যক্ষ করেছেন। পত্রিকায় খবর এসেছে সিটি করপোরেশনের মশক কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও নাকি গাড়ি চালায়। ঢাকা দক্ষিণে ময়লাবাহী গাড়ি ৩১৭টি, চালক ৮৬ জন। আর উত্তরে গাড়ি ১৬৫টি, চালক ৮২ জন। সিটি করপোরেশনের এই অব্যবস্থাপনা আর দুর্নীতির ফলে প্রাণ দিতে হলো নিরীহ শিক্ষার্থী নাঈমকে। সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, তিন বছর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে যে আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, তার কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সড়ক-মহাসড়কে অব্যবস্থাপনা আর মৃত্যুর মিছিল ক্রমাগত দীর্ঘতর হচ্ছে। চুক্তি ভিত্তিতে বাস চালানো, বেপরোয়া গতি, লাইসেন্সবিহীন ড্রাইভার, ট্রাফিক আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা, বিচার না হওয়া ইত্যাদি এই সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ। এগুলো নিরসনে কোনো উদ্যোগই পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বাসের প্রতিযোগিতা বন্ধে এক রুটে একটি বাস চালানোর পরিকল্পনা থাকলেও সেই উদ্যোগের আর কোন অগ্রগতি নেই। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক মো. ফয়েজ উল্লাহ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি আল কাদেরী জয়, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স প্রমুখ।