বিডার ইনভেস্টমেন্ট সামিট: শতকোটি ডলার বিনিয়োগ আনার প্রত্যাশা

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ সাড়ে পাঁচ বছর পর আজ রোববার (২৮ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ ১৫টি দেশের কাছ থেকে শতকোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। এক হাজার বিনিয়োগকারী এতে অংশ নিবেন। এর আগে ২০১৬ সালে সর্বশেষ বিনিয়োগ সম্মেলন (ইনভেস্টমেন্ট সামিট) হয়েছিল।
বিডা ছাড়াও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোনস অথরিটি (বেজা), বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনস অথরিটি (বেপজা), বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক অথরিটি (বিএইচটিপিএ), পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষ (পিপিপিএ), ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) এই সম্মেলনে সহযোগিতা করছে। রেডিসন ব্লুর ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
জমির অপ্রতুলতা, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, আইনি দুর্বলতাসহ নানা কারণে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতির তেমন একটা উন্নতি হয়নি। ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট (এফডিআই) এখনো মাত্র ৩০০ কোটি ডলারের ঘরে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৮৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে বাংলাদেশে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি, বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠানকে ওয়ানস্টেপ সার্ভিসে (ওএসএস) যুক্ত করেছে বিডা। এর ফলে দেশে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়াতে এবার সরাসরি বিনিয়োগ সম্মেলন করবো। বিগত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ টানতে যেসব সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, তা আমরা বিনিয়োগকারীদের বলবো।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বেশ ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। এছাড়া কয়েকটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশি বিনিয়োগের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগেও একটি ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এখন এটাকেই আমরা ভালোভাবে কাজে লাগাতে চাই।
বিডার জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মন্ডল জানান, বিনিয়োগ প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, তথ্যপ্রযুক্তি, তৈরি পোশাক, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক শিল্পসহ ১৪টি খাত নিয়ে আলোচনা হবে। প্রতিটি সেশনে একজন বিশেষজ্ঞ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন। দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরা আলোচনা করবেন।
আরও জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট খাতের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপদেষ্টারা সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা- বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকসহ (এআইআইবি) বৈশ্বিক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মহামারি করোনার তাণ্ডবের পর জাপান, চীনসহ বেশকয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার শুরু করে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতিতে নতুন করে বিনিয়োগ টানতে চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। গত বছর জাপানের দুটো বিনিয়োগ এসেছে বাংলাদেশে।
২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ৫০০ বিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় বিদেশি বিনিয়োগ আনাতে এই সম্মেলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।