যশোরে সমাবেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত: বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, দাবি জানাতে হয় গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে। স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবি জানিয়ে কোনো লাভ নেই। রাজপথে অগ্নিঝরা আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। আজকে জনগণকে সর্বস্বান্ত করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। হাজার কোটি টাকা লুট করা হচ্ছে, পাচার হচ্ছে। সেই টাকা উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেই। যে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো-পাতানো মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে সেই টাকা যে ব্যাংকে ছিল সেখানেই আছে এবং দুই কোটি টাকা বেড়ে আট কোটি টাকা হয়েছে। তাহলে কোন অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলো? শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাকে বন্দী করে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল সোমবার বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার দাবিতে যশোর সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, যে অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে অধিকতর গুরুতর অভিযোগ করেছিলো ১/১১এর অনির্বাচিত সরকার। পরবর্তীতে তারা সব অভিযোগ তুলে নেয়। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে দুই কোটি টাকার অভিযোগ আনা হয়, সেই টাকা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে যায়নি, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত তহবিলে যায়নি, কিংবা চেক দিয়ে ভাঙিয়ে কারও কোষাগারে রাখা হয়নি। দুর্নীতি সংঘটিত না হলেও দুর্নীতির অভিপ্রায় ছিল বেগম খালেদা জিয়ার এমন অভিযোগ এনে আদালতকে প্রভাবিত করে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে রাজনীতিতে এসে পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য দূরে ঠেলে দিয়ে জনগণের জন্যে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি নিরাপদ জীবন বাদ দিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ বেছে নিয়েছিলেন। রাজনীতিতে যোগদানের পর থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে অনেক ভয়ভীতি উপেক্ষা করে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে আন্দোলন করতে হয়েছে। তিনি সবসময় চেয়েছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত হোক। জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সকল মৌলিক অধিকার অক্ষুণœ থাক এবং বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত হোক। মানুষ যেন স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা পায়। অর্থনৈতিক সক্ষমতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তার ব্যক্তিগত কোনো আকাক্সক্ষা কিংবা চাওয়া পাওয়া ছিল না। জনগণের চাওয়া পাওয়াই ছিল তার ব্যক্তিগত চাওয়া পাওয়া। যখনই জনগণের জীবনে সংকট নেমে এসেছে, তখন তার জীবনও সংকটে পড়েছে। জনগণের ভাগ্যের সাথে নিজের ভাগ্য জড়িয়ে বেগম খালেদা জিয়া আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর-উন-নবীর সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, নগর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দার হোসেন খান, বিএনপি নেতা আইয়ূব হোসেন, জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, রবিউল ইসলাম রবি, মারুফ হোসেন, আনোয়ার হোসেন ইরান, আবু তালেব, আব্দুল মাজিদ, কাজী আব্দুল আজিজ, হাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইদ্রিস আলী, উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদিকা মনোয়ারা মোস্তফা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন লিটন প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আজম ও সদস্য আসাদুজ্জামান শাহিন।