চীনের সেই বন্দিশিবির

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চীনের সিনজিয়াংয়ে উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলিমদের যে বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছে, গোপনে তার ভিডিও ধারণ করেছেন একজন সাহসী অধিকারকর্মী। তাইওয়ানে অধ্যয়নকারী চীনা ওই অধিকারকর্মী বন্দিশিবিরের ১৮টি কেন্দ্র সম্পর্কে ভিডিওচিত্র ধারণ করেছেন তার ব্যাকপ্যাকের ভেতর গোপনে লুকিয়ে রাখা ক্যামেরা দিয়ে। ১৯ মিনিটের এই ভিডিও ইউটিউবে পোস্ট করেছেন গুয়ান গুয়ান নামের ওই অধিকারকর্মী। এতে যে ফুটেজ দেখানো হয়েছে তাতে দেখা যায় কাঁটাতারের বেড়া, গার্ডদের টাওয়ার, পুলিশের চেকপয়েন্ট, সেনা ব্যারাক ও সামরিক যানবাহন। এর মধ্যে একটি বন্দিশিবির প্রায় এক হাজার গজ লম্বা। তাতে লেখা রয়েছে ‘রিফর্ম থ্রু লেবার’ বা শ্রমের বিনিময়ে সংস্কার। এসব দৃশ্য ধারণ করার সময় গুয়ান গুয়ান চীনের উরুমকির রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলেন। একজন পর্যটকের মতো করে ঘুরতে ঘুরতে এসব দৃশ্য ধারণ করেছেন। গুয়ান গুয়ান জানতেন এসব এলাকায় কোনো মানুষকে অবকাশ যাপন করতে দেয়া হয় না। তাই তিনি ক্যামেরা বহন করেন ব্যাকপ্যাকে লুকানো অবস্থায়। সাহসী এই যুবক ছদ্মবেশ ধারণ করে এসব করেছেন। তিনি বিশ্বের কাছে ওইসব পুনঃশিক্ষার কেন্দ্র, বন্দিশিবির এবং জেলখানা সম্পর্কে তথ্য তুলে ধরতে চেয়েছেন। বিশেষ করে সিনজিয়াংয়ে উইঘুর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যে নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়, তা তুলে ধরেছেন। তিনি জানতেন পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হতো। কারণ, তিনি শাসকগোষ্ঠীর নৃশংস নৈরাজ্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীর সামনে অকাট্য প্রমাণ উপস্থাপন করছেন। এসব বন্দিশিবিরে কমপক্ষে ২০ লাখ মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে ভয়াবহ অবস্থায়। এই শহরে দুই বছর আগে সাইকেল চালিয়েছেন গুয়ান গুয়ান। তখনই তিনি এই বন্দিশিবির সম্পর্কে শুনতে পেয়েছেন। শুনেছেন স্কুলে উইঘুরদের ভাষা বন্ধ করে দেয়া এবং তাদেরকে ক্রীতদাসের মতো ব্যবহার করার বিষয়ে। তিনি জানতে পেয়েছেন ওই বন্দিশিবিরে তদন্তে বিদেশি সাংবাদিকদের অনুমোদন দেয়া হয় না। তাই এ বিষয়গুলোকে ধারণ করার সিদ্ধান্ত তিনিই নেন। এরপর গুয়ান গুয়ান আটটি শহর সফর করেছেন। সেখানে দেখতে পেয়েছেন এমন ১৮টি ক্যাম্প। মানচিত্রে এসব ক্যাম্পের বেশির ভাগকেই দেখানো হয়নি। তবে তিনি নিজে এসব ধারণ করতে পেরেছেন ক্যামেরায়। তা ইউটিউবে ছড়িয়ে দিয়েছেন।