খুলনায় গণঅনশনে পুলিশি বাধা

0

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা॥ খুলনায় পুলিশের বাধা, ধাওয়া, নেতাকর্মীদের টানা হেঁচড়ার মধ্যেও সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনশন করেছে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুই ঘণ্টা পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডা শেষে বেলা ১১টায় কেডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের অভ্যন্তরে অনশন করেন নেতাকর্মীরা। এছাড়া নবপল্লী কমিউনিটি সেন্টারেও কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্যে বিদেশে যাওয়ার অনুমতির দাবিতে কেন্দ্র থেকে অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সকাল থেকে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমবেত হতে থাকেন। কিন্তু পুলিশ রাস্তায় কর্মসূচি পালন করতে দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। অনেকক্ষণ পুলিশের সাথে এ বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশ নেতাকর্মীদের টেনে হিঁচড়ে তুলে দেয়। অনশন চলাকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতির বক্তব্যে বলেন, পুলিশ বিএনপির গণতান্ত্রিক ও মানবিক কর্মসূচিতে তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশের এহেন অসভ্য, অমানবিক ও নগ্ন আচরণ শান্তিপ্রিয় জনগণ মোটেই সমর্থন করে না। খুলনার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কার নির্দেশে এবং কাকে খুশি করার জন্য এ ধরনের নগ্ন হামলা চালিয়েছেন? একদিন তার জবাব দিতে হবে।
বিকেল ৪টায় বিশিষ্ট ভাষা সৈনিক ও খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট্ বজলুর রহমান নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গান। এদিকে অনশন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জান মনি, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আমির এজাজ খান, অ্যাডভোকেট গাজী আব্দুল বারী, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশাররফ হোসেন, সেকেন্দার জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, এস আর ফারুক, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আব্দুর রশিদ, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, রেহানা আক্তার, সিরাজুল হক নান্নু, আবু হোসেন বাবু, জি এম কামরুজ্জামান টুকু, মাহবুব কায়সার, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ প্রমূখ। এদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্যে বিদেশে নেয়ার দাবিতে আলাদা গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছে মহানগর ও জেলা বিএনপি। নগরীর সোনাডাঙ্গায় নবপল্লী কমিউনিটি সেন্টারে সকাল থেকে শুরু হয় কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচি। এরআগে বিএনপির পক্ষ থেকে গণঅনশনের জন্য তিনটি স্থানে অনুমতি চাওয়া হয়। কে ডি ঘোষ রোড দলীয় কার্যালয় সংলগ্ন হেলাতলা মোড় ও নগরীর দুটি পার্কের নাম উল্লেখ করে আবেদন করলেও অনুমতি দেয়নি খুলনা সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন। এমনকি শনিবার সকাল থেকে কর্মসূচিস্থল নবপল্লী কমিউনিটি সেন্টার ঘিরে রেখেছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। ধীরে ধীরে সেখানে বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে পুলিশ কমিউনিটি সেন্টারের দখল ছেড়ে সরে গেলে সকাল ১০টার দিকে কর্মসূচি শুরু হয়। তবে দলীয় নেতাকর্মীদেরকে সামনের সড়কে বা আশেপাশে অবস্থান করতে দেয়নি। পুলিশ ছিল মারমুখি ও সতর্ক অবস্থানে। মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজার সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান। দিনব্যাপী এ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা শফিকুল আলম তুহিন, এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী, খান জুলফিকার আলী জুলু, আজিজুল হাসান দুলু, সুলতান মাহমুদ, এহতেশামুল হক শাওন, শেখ সাদী, আজিজা খানম এলিজা, শেখ হাফিজুর রহমান, কাজী মিজানুর রহমান, মাসুদ পারভেজ বাবু, কে এম হুমায়ুন কবির, মাহবুব হাসান পিয়ারু, তৈয়েবুর রহমান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, শামীম কবির, অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা আমিন, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, শেখ ইমাম হোসেন, রফিকুল ইসলাম বাবু, ইবাদুল হক রুবায়েদ, আতাউর রহমান রুনু, ফারুক হিল্টন, কাজী নেহিবুল হাসান নেহিম, আব্দুল আজিজ সুমন, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, গোলাম মোস্তফা তুহিন, মো. তাজিম বিশ^াস, সজীব তালুকদার প্রমুখ। কর্মসূচির সাথে সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা সোহরাব হোসেন।