উজানে শূন্যতা : চিরনিদ্রায় হাসান আজিজুল হক

0

‘উজান’ এখন শূন্য। আর সেখানে বসবে না লেখক-সাহিত্যিকদের আড্ডা। উপমহাদেশের লোকসমাজ ডেস্ক॥ প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দর্শন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হাসান আজিজুল হকের বাড়ি এই ‘উজান’। গত সোমবার রাত সোয়া ৯টায় অসুস্থতাজনিত কারণে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গতকাল দুপুরে রাবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে তার জানাজা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সম্পন্ন হয়েছে তার দাফন। এর আগে দুপুর ১২টায় রাবির শহীদ মিনারে হাসান আজিজুল হকের মরদেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয়। এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। এরপর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। তারপর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
এ সময় রাবি ভিসি অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, উপ-ভিসি অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, রাজশাহী-৩ (পবা ও মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন। হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে তার আগে সোমবার রাতেই শোক প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। এ ছাড়া রাজশাহী প্রেস ক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করে। জীবদ্দশায় হাসান আজিজুল হক সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ২০১৯ সালে তাকে দেয়া হয় স্বাধীনতা পুরস্কার। প্রখ্যাত এ কথাসাহিত্যিক ১৯৩৯ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জীবনের অধিকাংশ সময় রাজশাহীতে কাটিয়েছেন তিনি। হাসান আজিজুল হক ১৯৭৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এরপর ২০০৪ সাল পর্যন্ত একটানা ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন তিনি।