মোংলায় দুই নাবিকের মরদেহ উদ্ধার, এখনও নিখোঁজ ৩

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ বাগেরহাটের মোংলা বন্দর চ্যানেলে নিখোজের ২০ ঘন্টা পরে নিখোজ দুই নাবিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোংলা বন্দর চ্যানেলের হারবাড়িায়ার-৯ নম্বর বয়া এলাকা থেকে এই মরদেহ উদ্ধার করে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী দল। এখনও তিন নাবিক নিখোজ রয়েছে। নিহতের মোংলা থানায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। মোংলা থানায় পৌছানোর পরে জীবীত উদ্ধার হওয়া নাবিকদের মাধ্যমে মৃত নাবিকদের পরিচয় নিশ্চিতের চেষ্টা করা হবে। এর আগে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টায় বন্দরের হারবাড়িায়ার-৯ নম্বর বয়া এলাকায় পানামা পতাকাবহী জাহাজ হ্যান্ডিপার্কের ধাক্কায় ডুবে যায় কয়লা বোঝাই কার্গো এম ভি ফারদিন-১। এতে ওই জাহাজে থাকা ৭ নাবিকের মধ্যে ৫ নাবিক নিখোজ হয়। নিখোজ নাবিকরা হলেন, পিরোজপুর জেলার সৌরভকাঠি উপজেলার বোটমাস্টার মহিউদ্দিন, একই এলাকার রবিউল, নূর আলম, ভান্ডারিয়া উপজেলার জিহাদ, এবং মোংলা এলাকার সামসু। সোমবার রাতে উদ্ধার হওয়া জীবীত নাবিকরা হলেন, পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার পাইটখালী গ্রামের রায়হান চৌধুরী, বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মাকরডোন নারিকেল তলা এলাকার মোঃ রুবল। উদ্ধার হওয়া নাবিক রায়হান চৌধুরী বলেন, আমরা কয়লা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে মাদার ভ্যাসেল আমাদের কার্গোটিকে ধাক্কা দেয়। মুহুর্তের মধ্যে আমাদের কার্গোটি ডুবে যায়। মোংলাস্থ শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স টি হকের সুপার ভাইজার মোঃ লোকমান হোসেন বলেন, বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজ ‘এলিনা বি’ থেকে ৩৫০ টন কয়লা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল কার্গো জাহাজ ফারদিন-১। পণ্য খালাস শেষে পানামা পতাকাবহী হ্যান্ডিপার্ক জাহাজ (মাদার ভেসেল) বন্দর ত্যাগ করার সময় বিপরীত থেকে আসা কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজটিকে ধাক্কা দেয়। ওই কার্গোটি ডুবে যায়। এসময় অন্য একটি লঞ্চ এসে কার্গোর তে থাকা ৭ জনের মধ্যে দুইজনকে উদ্ধার করলেও পাঁচ জন নাবিক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। মাল্টা পতাকাবাহী বিদেশি জাহাজ এলিনা বি’র স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজ বলেন, সুপার ভাইজার লোকমান হোসেনের কাছ থেকে দূর্ঘটনার খবর শুনেছি। নিখোঁজ নাবিককে উদ্ধারে কোস্টগার্ড অভিযান শুরু করেছে। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলার গোয়েন্দা কর্মকর্তা লে. লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, খরব পেয়ে রাতেই কোস্টগার্ডের সদস্যরা ওই এলাকায় পৌছেছে। নিখোজ পাঁচ নাবিকের মধ্যে আমরা দুই নাবিকের মরদেহ উদ্ধার করেছি। এখনও তিন নাবিক নিখোজ রয়েছে। নিখোজ নাবিকদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ শিপিং আইন অনুযায়ী ডুবে যাওয়া বলগেটটির বানিজ্যিক পন্য পরিবহনের অনুমতি ছিল না। তারা বেআইনিভাবে কয়লা পরিবহন করেছে। এসব বিষয়ে বলগেট মালিকদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বন্দরের এই কর্মকর্তা। গত ৮ অক্টোবর সার নিয়ে বন্দরের পশুর নদীতে ও ৯ অক্টোবর পাথর নিয়ে ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় দুইটি কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে।