লোকসমাজ ডেস্ক॥ ফিলিস্তিনিদের ওপর চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক হামলা ও সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি দখলদাররা। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা ফিলিস্তানিদের ওপর চলমান হামলা ও সহিংসতা বন্ধে ইসলায়েল সরকারের পদক্ষেপেরও সমালোচনা করেছেন। তারা বলেন, চতুর্থ জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী দখলদার শক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনিদের রক্ষার বাধ্যবাধকাতাও রয়েছে ইসরায়েলের। ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা বন্ধে কোনো ভূমিকার রাখছে না ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী বা অন্যান্য নিরাপত্তাকর্মীরা। বরং তারা অবৈধভাবে বসতী স্থাপনকারী ইসরায়েলি হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে আসছে। যদিও এসব ভূমি ফিলিস্তিনিদের তারপরও তারা অবৈধ বসতী স্থাপনকারীদের সহযোগিত করছে বলেও জানান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর ফিলিস্তিনিদের ওপর অবৈধ বসতী স্থাপনকারীরা ৪১০ বার হামলা চালিয়েছে। এসময় ফিলিস্তিনের চারজন নিহত হয়। গত বছর ৩৫৮ বার হামলা করা হয়। এছাড়া ২০১৯ সালে এ ধরনের হামলা হয়েছিল ৩৩৫ বার। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার রেকর্ড হয়েছে। জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা জানান, দখলকৃত পশ্চিম তীরের গ্রামে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে এসব হামলা পরিচালিত হয়। ইসরায়েলি বসতির কাছেই এসব ঘটনা ঘটছে।
১৯৬৭ সাল থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর জাতিসংঘের বিশেষ দূত মাইকেল লিংকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিভিন্ন ভাবে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চলানো হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, শারীরিক নির্যাতন, গুলি করা, ক্ষেত ও গবাদি পশুর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, সম্পদ ধ্বংস, চুরি, গাছ ও শস্য বিনষ্ট, পশুপালক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখানো। এছাড়াও ফিলিস্তিনের জলপাই চাষিদের ওপরও নিয়মিত লোহার রড ও পাইপ নিয়ে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলিরা। মাঝে মধ্যেই তাদের বাগান নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে ও সেখান থেকে জলপাই চুরি করেও নিয়ে যাওয়া হয়। অবৈধ বসতী স্থাপনকারীদের সহায়তা দিচ্ছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলের নিজস্ব আইন ভঙ্গ করে পশ্চিত তীরে ১৪০টির বেশি নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জবরদস্তিমূলক পরিবেশকে উস্কে দিচ্ছে ও সহিংসতাকে উত্সাহিত করছে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।