করোনায় মৃত্যু কমলেও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনাভাইরাসে দেশে কমেছে মৃত্যুহার। মৃত্যুহার কমলেও এর প্রভাবে হতাশা-বিষণ্ণতা ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকে। পড়েছে নানারকম সামাজিক প্রতিবন্ধকতায়। সবচেয়ে বেশি ধকলের মুখে পড়েছে করোনা আক্রান্ত পরিবারগুলো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চাইল্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. সাদিয়া আফরিন এসব তথ্য জানান। সোমবার (৮ নভেম্বর) বিএসএমএমইউতে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে করোনা সংক্রমণ শুরু হলেও ২০২০ সালের মাঝামাঝি এসে এর প্রকোপে পৃথিবী প্রায় থমকে যায়। পারিপার্শ্বিক জীবন, রাষ্ট্রীয় কার্যকলাপ, আন্তঃরাষ্ট্রীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এর প্রকোপ থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও।
করোনাভাইরাসের কারণে গ্রাম থেকে শুরু করে রাজধানীর মানুষ এক অনিশ্চয়তায় বেসামাল হয়ে যায় উল্লেখ করে এই চিকিৎসক বলেন, গবেষণা মতে, করোনায় হতাশা ও বিষণ্ণতা ছাড়াও মানুষের মধ্যে প্যানিক অ্যাটাক, শুচিবাই, আঘাত-পরবর্তী মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা, মাদকাসক্তিসহ নানা সমস্যা বেড়ে যায়। মানসিক রোগ নিয়ে কাজ করা পেশাজীবীরা অনুভব করেন যে, মানসিক রোগের আরেক ঢেউ মানবজাতির ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এই ঢেউয়ে করোনায় স্বজন হারানো পরিবারের মানুষগুলোকে কিছুটা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়। ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, নানারকম সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, অবহেলা-অসচেতনতার কারণে মানসিকভাবে অসুস্থ হলেও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে চায় না অনেকে। প্রায় ৯২ শতাংশ মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত এ সেবা নেয় না। তিনি জানান, সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৭ হাজারের বেশি মানুষ। দেখা যায়, গ্রামের তুলনায় শহরের মানুষের মধ্যে কমিউনিটি সাপোর্ট, সামাজিক বন্ধন, বৈরী পরিবেশে থাকার অভিজ্ঞতা কম, তাই তাদের মধ্যে মৃত্যুশোক সামলানোর ক্ষমতা ও অন্যান্য মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা দুর্বল। কিন্তু গ্রাম বা শহর উভয় পরিবেশের মানুষের মধ্যে এসব সমস্যা বেড়েছে। তাই সব মানুষের জন্যই প্রয়োজন উপযুক্ত সাইকোলজিক্যাল সাপোর্ট। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ’র উপাচার্য শরফুদ্দিন আহমেদ, মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদসহ অন্য চিকিৎসকরা।