রেলের আইবাস সিস্টেমে জটিলতা কঠোর আন্দোলনে রানিং স্টাফরা

0

এহতেশামুল হক শাওন, খুলনা॥ বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরতদের বেতন ভাতা আইবাস প্লাস প্লাস সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইবাসে পরিবহন বিভাগের রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মরতরা। অতিরিক্ত কাজ করেও সুবিধাবঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায় কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ট্রেন চালনায় যুক্ত কর্মীদের (ট্রেনচালক, গার্ড ও টিকিট টেকার বা টিটি) রানিং স্টাফ মর্যাদা দেয়া হয়। নির্ধারিত ডিউটির পাশাপাশি কর্মরত অবস্থায় যত দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করেছেন সেটিকে মাইলেজ হিসেবে বাড়তি ভাতা পাবেন। একজন রানিং কর্মচারী রেলওয়ে স্টাবলিশমেন্ট কোড ভলিউম-১-এর চ্যাপ্টার-৫ এবং লোকোমোটিভ অ্যান্ড রানিং শেড ম্যানুয়াল জিআই চ্যাপ্টার-১২ অনুযায়ী ১০০ মাইল বা প্রতি ৮ ঘণ্টা ট্রেন পরিচালনার জন্য একদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ রানিং ভাতা বা মাইলেজ প্রাপ্য হবেন। সরকারি যেকোনো বন্ধের দিনে ডিউটি করলে হলিডে মাইলেজ প্রাপ্তির বিধানও রয়েছে। লোকবলস্বল্পতাসহ ট্রেন চলাচল নিরবচ্ছিন্ন ও স্বাভাবিক রাখতে রানিং স্টাফদের দৈনিক নির্ধারিত ১২ কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে। এ হিসাবে একজন রানিং কর্মচারী মাসে প্রায় ৮-১০ হাজার মাইল পর্যন্ত ট্রেন চালনা করেন। কিন্তু বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষিত আইবাস প্লাস প্লাস সিস্টেমে রানিং কর্মচারীদের মাইলেজ তথ্য ইনপুটের ক্ষেত্রে তিন হাজার মাইলের বেশি দেয়া যাচ্ছে না। ফলে রানিং স্টাফরা অতিরিক্ত সময় ডিউটি করেও ব্রিটিশ আমল থেকে চালু থাকা সুবিধাবঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন। এ বিষয়ে রেলওয়ের রানিং কর্মচারীরা রেলের দপ্তরে চিঠি দিয়েও সমস্যা সমাধান করতে পারেননি। রানিং স্টাফরা অভিযোগ করেছেন, রেলওয়ে অ্যাক্ট অনুযায়ী রানিং স্টাফদের ছুটি, পাস, চিত্তবিনোদন ও অবসরোত্তর গ্র্যাচুইটিতে তাদের মূল বেতনের ৭৫ শতাংশ যোগ করে প্রাপ্যতার বিধান আছে। কিন্তু নতুন নিয়মে রেলওয়ে রানিং কর্মীদের এসব সুবিধাও থাকছে না। সম্প্রতি ইএফটির মাধ্যমে রেলের সকল বেতন-ভাতা প্রদান প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্তিতে বিশেষ ভাতা সীমিত হয়ে যাওয়ার ঘোষণা মানছেন না রানিং স্টাফরা।
এদিকে ন্যায্য বেতন ভাতা প্রাপ্তির দাবিতে শুক্রবার সকালে খুলনা রেলস্টেশনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ সংগ্রাম পরিষদ। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আব্দুল হাকিমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গার্ড কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো: আফজাল হোসেন, রানিং স্টাফ সমিতির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি সেলিম হাওলাদার, টিটিই মনোয়ার হোসেন, রেল শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম হামিদুল্লাহ, মোহাম্মদ সেলিম, শাহিনুজ্জামান, শিকদার জুলফিকার আল মামুন, কাজী আবুল হাশেম, কাজী আমিনুল ইসলাম, আল মামুন রাজা, ইশারাত মল্লিক, ইসরাইল হোসেন, মহিতুল ইসলাম, মিন্টু চন্দ্র পাল প্রমুখ। দাবি আদায় না হলে তারা কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলে হুশিয়ার করেন। এর ফলে ট্রেন চলাচল বিঘিœত হলে তার দায়ভার কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে। জানতে চাইলে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল বিভাগের প্রথান যন্ত্র প্রকৌশলী কুদরত ই খুদা বলেন, কর্মীদের বেতন-ভাতা ইএফটির মাধ্যমে করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা তিন হাজার মাইলের বেশি আইবাস সফটওয়্যারে ইনপুট হচ্ছে না। বেতন-ভাতা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে আমরা কাজ করছি। আশা করছি শিগগিরই সমাধান হবে।