আমাদের রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলায় হাতিয়ার হিসেবে নতুন প্রজন্মকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে। বুধবার (৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘জাতীয় চার নেতা হত্যাকাণ্ড: বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক সেমিনার এবং ইনস্টিটিউটে এমফিল লিডিং টু পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া নতুন গবেষকদের পরিচিতি অনুষ্ঠানে তিনি এমন কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা নতুন প্রজন্মকে অসাম্প্রদায়িক হিসেবে গড়ে তুলতে পারেনি। সামনের দিনে আমরা তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে চাই। সেভাবে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। দীপু মনি বলেন, এবারের সাম্প্রদায়িক হামলায় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে নতুন প্রজন্মরা, যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বা ১৯ এর মধ্যে। এই পরিবারগুলো ব্যর্থ হয়েছে তাদের মধ্যে মূল্যবোধ বা চেতনা জাগাতে। আমাদের রাজনীতি ব্যর্থ হয়েছে নতুন প্রজন্মকে তৈরি করতে। আর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ব্যর্থ হয়েছে তাদের অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে। আমাদের নিজেদের মধ্যে এই বোধ জাগ্রত করতে হবে যে সামনে আর ব্যর্থ হতে দেবো না কাউকে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং জাতীয় চার নেতা যে বাংলাদেশ গড়তে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করলেন সে বাংলাদেশ গড়ার জন্য যেরকম উপযুক্ত মানুষ হতে হবে সেভাবে আমাদের নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলবো আমরা। অন্য অনেক কিছুর ব্যর্থতাকে হয়তো অতিক্রম করা যায়, কিন্তু শিক্ষার যায়গায় যদি ঘাটতি পড়ে সেটা অনেক প্রজন্মেকে প্রভাবিত করে। সেটার প্রভাব অনেক সুদূরপ্রসারী। মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও চার নেতাকে হত্যার উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাধীন দেশের আদর্শ-মূল্যবোধ দূর করে পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেওয়া। যারা গণতন্ত্র, বৈষম্যহীন ও অসাম্প্রদায়িক দেশ মেনে নিতে পারেনি তারাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, জাতীয় চার নেতা হত্যা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর ষড়যন্ত্র। আজকে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষণার প্রস্তাব আসছে। সব উপলব্ধি কী গবেষণায় বের হয়? গবেষণায় কী কখনো ওই ব্যথা তুলে আনা সম্ভব। যেখানে সন্তান জানে নিরপরাধ দেশপ্রেমিক মানুষকে জেলখানায় হত্যা করা হয়। ক্ষমতার প্রলোভন, চেতনা বিনাশের অবিনাশী খেলা- সেটি কী সব সময় গবেষণায় উঠে আসে? সব উপলব্ধি কী গবেষণায় উঠে আনা যায়। আমার মনে হয় কখনো কখনো একমাত্র ইতিহাস চেতনা এবং চর্চা আমাদের শুদ্ধ করতে পারে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম। মুখ্য আলোচক ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনার ব্রজলাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক শরীফ আতিকুজ্জামান। একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপর মতামত দেন।