আরেকটি উড়ন্ত জয় ইংলিশদের

0

পিন্টু আনোয়ার॥ অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের ম্যাচ মানে ধুন্ধুমার লড়াই, টানটান উত্তেজনা। ক্রিকেটের দুই পরাশক্তির ম্যাচকে ঘিরে দর্শকদেরও থাকে বিস্তর আগ্রহ। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের ম্যাচে দেখা গেলো না সেই উত্তাপ। এবারের বিশ^কাপে আরো একটি উড়ন্ত জয় পেল ইংল্যান্ড। গতকাল দুবাইয়ে হেসেখেলেই অস্ট্রেলিয়াকে ৮ উইকেটে হারায় ইংলিশরা। টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে ১২৫ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। শেষ বলে উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় অজিরা । জবাবে ৫০ বল বাকি রেখে টার্গেট পার করে ইংল্যান্ড। ৩২ বলে হার না মানা ৭১ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার জস বাটলার। ব্যাট হাতে বাটলার হাঁকান পাঁচটি করে চার-ছয়। এবারের আসরের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড স্পর্শ করলেন জস বাটলার। গতকাল ২৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন ইংলিশ ওপেনার। চলতি আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে ঠিক ২৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার এইডেন মার্করাম। আসরে দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৭ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। এবারের বিশ^কাপের সুপার টুয়েলভ পর্বের ‘গ্রুপ ওয়ান’-এ ইংল্যান্ডের এটি টানা তৃতীয় জয়। গ্রুপে ৬ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলো ইংলিশরা। গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় ইংল্যান্ড। ওই ম্যাচে ক্যারিবীয়দের মাত্র ৫৫ রানে গুঁড়িয়ে দেয় ইংলিশরা। আর দ্বিতীয় ম্যাচে তারা হারায় টানা তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে বিশ^কাপে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশকে। আগে ব্যাটিং শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১২৪ রান। সেদিন ৩৫ বল বাকি রেখে ইংল্যান্ড পায় ৮ উইকেটের জয়। গ্রুপে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা বাকি ইংলিশদের। অন্যদিকে আসরে প্রথম হার দেখলো অস্ট্রেলিয়া। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় পায় অজিরা। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলা বাকি অজিদের।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টার্গেট বড় ছিল না ইংল্যান্ডের। আর তা আরো ছোট করে আনেন ইংলিশ ওপেনাররা। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর বোর্ডে জমা পড়ে বিনা উইকেটে ৬৬ রান। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে পাওয়ার প্লে-তে সর্বোচ্চ রান এটি। এসময় ১৭ বলে ২১ রান করেন জেসন রয় । তখন অপর ওপেনার জস বাটলারের ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ৪০ রান। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে দুই ইংলিশ ব্যাটার হাঁকান তিনটি বাউন্ডারি ও চারটি ছক্কা। ৬.২তম ওভারে দলীয় ৬৬ রানেই উইকেট হারান জেসন রয়। ২০ বলে ২২ রান আসে রয়ের ব্যাট থেকে। অজি লেগস্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পার ডেলিভারিতে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন রয়। এরপর ৮ বলে ৮ রান করে আউট হন ডেভিড মালান। বাঁহাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগারের বলে উইকেটের পেছনে অজি কিপার ম্যাথিউ ওয়েডের গ্লাভসে ক্যাচ দেন আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর ব্যাটার। তবে বাটলারের দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত উড়ন্ত জয়ই পায় ইংলিশরা। এর আগে মাত্র ৫১ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে বড় লজ্জার মুখে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট হাতে লড়াই করেন। তবে তার ইনিংসটি ছিল মন্থর। ৪৯ বলে ৪৪ রান করেন ফিঞ্চ। শেষ দিকে প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্কের বড় শটে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১২০’র কোঠা পার করে। ইংল্যান্ডের বল হাতে পেসার ক্রিস জর্ডান তিন, ক্রিস ওকস ও টাইমাল মিলস নেন সমান দুই উইকেট। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৮ রানে দুই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১.২ ওভারে ব্যক্তিগত ১ রানে ক্রিস ওকসের শিকারে পরিণত হন আগের ম্যাচে অর্ধশতক পাওয়া ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ান ডাউন ব্যাটার স্টিভেন স্মিথও ফেরেন ব্যক্তিগত ১ রানে। দলীয় ১৫ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় অজিরা। ৬ রান করে ওকসের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৯ বলে ৬)। চার বল খেললেও রানের খাতা খুলতে পারেননি মার্কাস স্টয়নিস। ১৮ বলে ১৮ করে সাজঘরে ফেরেন ম্যাথু ওয়েড। অ্যাশটন অ্যাগার করেন ২০ বলে ২০ রান। আর শেষ দিকে কামিন্স ৩ বলে ১২ ও স্টার্ক ৬ বলে ১৩ রান করেন।