৮ পিস ইয়াবার মামলায় সাড়ে ছয় বছর হাজতবাস, অবশেষে মুক্তি

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের ঝিকরগাছায় আট পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার আসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তি প্রায় সাড়ে ছয় বছর হাজতবাসের পর মুক্তি পেয়েছেন। তার দীর্ঘ এ হাজতবাসকে সাজা বিবেচনায় নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ছয় মাসের কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন যশোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গৌতম মল্লিক। অবশ্য আসলামের বিনা বিচারে জেল খাটার বিষয়টি আগেই আদালতের নজরে আনে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। এরপর আদালতের নির্দেশে ১৯ অক্টোবর আসলামকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। আসলাম যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রাজবাড়িয়া গ্রামের কাওসার আলী সরদারের ছেলে।
ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল টিমের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, মালেশিয়া প্রবাসী আসলাম ২০১৪ সালে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের ২৭ মে যশোরের ঝিকরগাছা রাজবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের মাঠের পূর্ব পাশ থেকে পুলিশ আট পিস ইয়াবাসহ আসলামকে গ্রেফতার করে। এই মামলায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। পরে পরিবারের লোকজন আর আসলামের খোঁজখবর নেয়নি। তার জন্য আইনজীবীও নিয়োগ দেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে কারাগারেই বন্দি ছিলেন তিনি। কারাবন্দি অবস্থায় তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ব্লাস্টের প্যারালিগ্যাল টিমের সঙ্গে আসলামের সাক্ষাৎ হয়। এরপর তার পরিবারের লোকজনের ঠিকানা বের করা হয় এবং তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের আবেদন করা হয়। বিনা বিচারে ছয় বছর পাঁচ মাস হাজত খাটার বিষয়টি অবগত করে গত ১৮ অক্টোবর আদালতে আসলামের জামিন আবেদন করা হয়। এরপর আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। গত ২১ অক্টোবর আদালতে দোষ স্বীকার করে তার হাজতবাসকে সাজা হিসেবে বিবেচনার আবেদন করেন আসলাম। বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আসলামের হাজতবাসকে সাজা হিসেবে বিবেচনা করে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। ফলে মামলা থেকে একেবারেই মুক্তি পান আসলাম। আসলামের ভাই আবু বক্কর বলেন, আসলাম মালেশিয়ায় ছিল এক বছর। এরপর বাড়ি ফিরে আসে। এক পর্যায়ে সে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তাকে নিষেধ করলে উল্টো আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হতো। একদিন নেশার আসর থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। প্রথম দিকে আমরা খোঁজখবর নিতাম। পরে আর নিতে পারিনি। আমরা ভাইয়েরা সবাই গরিব। নিজেদের সংসারই ঠিকমত চলে না। কয়েকদিন আগে আসলামকে আমাদের বাড়িতে দিয়ে গেছে পুলিশ। তার চিকিৎসা করানোর মত টাকা আমাদের নেই। তারপরও তার চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করবো।