যশোরে ইমাম পরিষদের সভায় নেতৃবৃন্দ কুমিল্লার ঘটনা সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্টের একটি গভীর ষড়যন্ত্র

0

সোমবার বাদমাগরিব যশোর জামিয়া ইসলামিয়া দড়াটানা মাদরাসার অফিসকক্ষে জেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মাওলানা আনওয়ারুল করীম যশোরীর সভাপতিত্বে জেলা ইমাম পরিষদের উপদেষ্টা ও নির্বাহী পরিষদের এক জরুরি পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, পূজমন্ডপে মূর্তির পায়ের নিচে পবিত্র আল-কুরআনুল কারীম রেখে দেশের ৯২ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে কঠিন আঘাত হেনেছে। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি গ্রন্থ আল-কুরআনুল কারীমের প্রতি চরম বেয়াদবি ও সীমাহীন ধৃষ্ঠতা প্রদর্শন করা হয়েছে। সভায় পূজামন্ডপে পবিত্র কুরআন অবমাননার ঘটনায় গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি বিস্ময় প্রকাশ করে বলা হয় যে, সি.সি ক্যামেরার যুগে মূর্তির পায়ের নিচে কে বা কারা পবিত্র কুরআনি মাজিদ রেখেছে অদ্যাবধি চিহ্নিত করা হলো না। প্রকৃত অপরাধিকে চিহ্নিত করে সমুচিত শাস্তির ব্যবস্থা হলে আমাদের বিশ্বাস, কুমিল্লার ঘটনা কুমিল্লাতেই দাফন হয়ে যেতো। এত প্রাণহানী, মন্দির ভাঙচুর, জানমালের ক্ষয়ক্ষতি, দেশব্যাপী প্রশাসনের ব্যস্ততা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হামলা ইত্যাদি সৃষ্টি হতো না।
সভায় বলা হয়, ষড়যন্ত্রমূলক ও পরিকল্পিতভাবে মন্দিরে কুরআন মাজীদ রেখে প্রতিবাদের অবস্থা সৃষ্টি করে জনতার প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালানো মন্দির ভাঙচুর উভয়টা নিন্দনীয়, কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কুমিল্লার পূজামন্ডপ কমিটির কোনোভাবেই এই অপরাধের দায়ভার এড়াতে পারে না। ওই কমিটিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসলে ষড়যন্ত্রকারী কে বা কারা, কোন উদ্দেশ্যে করেছে বের হয়ে আসতে পারে। সুতরাং মূর্তির পায়ের নিচে কুরআন মাজীদ রেখে সীমাহীন অপরাধ করে যারা সাম্প্রদায়িক শান্তি বিঘিœত করেছে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। তারা আরও বলেন, সবশেষে মুসলমান ভাইদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান, এশিয়ার মধ্যে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ, এদেশ আমাদের। পরধর্ম সহিষ্ণুতা ইসলামের বড় শিক্ষা। এদেশে বহু বছর পূর্ব থেকে আউলিয়া কেরাম, বুজুর্গানে দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে এসেছে। তাদের আখলাক, আচরণ এবং ইসলামের সুমহান আদর্শে মুগ্ধ হয়ে দলে দলে অমুসলিমরা মুসলমান হয়েছে। জোরপূর্বক নয়, অস্ত্র বলে নয়। এখনও বহু অমুসলিম ইসলামে দিক্ষিত হচ্ছে। মূর্তি ভেঙে, দোকানপাট ভাঙচুর করে, দেশের সম্পদ নষ্ট করে ইসলাম কায়েম হবে না। ইসলামও এই ধরণের কর্মকান্ডকে সমর্থন করে না। আসুন দেশ জাতি ও ইসলামের স্বার্থে ধৈর্য ও সহনশীলতার সহিত আমাদের পূর্ব পুরুষদের আদর্শ সামনে রেখে পরিস্থিতি মোকাবেলা করার চেষ্টা করি। সভায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আনওয়ারুল করীম যশোরী, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা হামিদুল ইসলাম, মাওলানা বেলায়েত হোসেন, মাওলানা নাজির উদ্দীন, মাওলানা নাসিরুল্লাহ, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম, মুফতি শামসুর রহমান, মুফতি আমানুল্লাহ কাসেমী, মুফতি কামরুল আনওয়ার নাঈম, মাওলানা আলমগীর মুফতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।