লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥গত সপ্তাহের তুলনায় রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে তেল, চিনি, পেঁয়াজ, মাছ, মুরগি, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব কিছুরই দাম বেড়েছে। এসব নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অতিরিক্ত দামের কারণে বাজা‌রে আসা সাধারণ ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন।বাজারে এসে সব কিছুর চড়া দাম দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ স্বল্প আয়ের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা। অনেকেই চাহিদা মতো বাজার করতে না পেরে ফিরে গেছেন।
বৃহস্প‌তিবার (৭ অক্টোবর) সরেজমিনে রাজধানীর নিউমার্কেট, হাতিরপুল ও মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থে‌কে ৭০ টাকা, চি‌নির কে‌জি ৮৫ টাকা, আলু ২৫ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, সিম ১৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা।
অন্যদিকে, মাছের বাজারেও প্রতিটি মাছ তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। শিং (মাঝারি) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, কই ২০০ থেকে ২২৫ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়।
গরু এবং খাসির মাংসের কেজি যথাক্রমে ৫৮০ ও ৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও বেড়েছে মুরগীর দাম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, লেয়ার ২৪০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির কেজি ৩৩০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজিতে।
গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সব রকমের চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২ টাকা থেকে ৫ টাকা। মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা। নাজিরশাইল মান ভে‌দে ৬৭ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৬২ থেকে ৮০ টাকা। পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। আটাশ চালের বর্তমান দাম ৫০ থেকে ৫২ টাকা হলেও গত সপ্তাহের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা।
কোম্পানি ভে‌দে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, যার দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৪৫ টাকা। ২ লিটার ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ২৮৭ থেকে ২৯৫ টাকা। আর ৫‌ লিটা‌র তেলের বর্তমান দাম ৭২০ থেকে ৭৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৭১৫ থেকে ৭৩০ টাকা।
মোহাম্মদপুর টাউন হলে বাজার করতে আসা ব্যাংকার সে‌লিনা আক্তার শে‌লি বলেন, সব কিছুর দাম বেশি। এত বেশি দাম হলে আমাদের মতো ছোট চাকুরীজীবীরা কী খাবো? কীভাবে চল‌বো? ব্রয়লার মুরগির দামও ১৮০ টাকা কেজি।
তি‌নি আরও ব‌লেন, শুক্রবার সবাই বাজা‌রে আ‌সবে ব‌লে সব জিনিসের দাম বেশি থাকবে। তাই আজ পুরো সপ্তাহের জন্য বাজার করতে এসেছিলাম। কিন্তু প্রতিটি জিনিসের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখে ইচ্ছে থাকলেও অতিরিক্ত দামের কারণে তুলনামূলক কম জিনিস নিয়েই ফিরছি।
নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা বেসরকারি এক‌টি হাসপাতালের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সব কিছুর এত চড়া দাম, মনমতো কিছুই কেনা যায় না। শখ করে কিছু খেতে চাইলেও অতিরিক্ত দামের কারণে তা কেনা হয়ে ওঠে না। আজকের বাজারে সবজি থেকে শুরু করে মাছ, তেল, চি‌নি, পেঁয়াজ, ডিম, এমনকি ব্রয়লার মুরগির দামও বে‌শি। সব কিছু সামর্থ্যের বাই‌রে। এত বেশি দাম হলে আমরা চলবো কী করে?