বৃষ্টির অজুহাতে যশোরের বাজারে বেড়েই চলেছে কাঁচা মরিচের অস্বাভাবিক দাম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরের বাজারে কাঁচা মরিচের ঝাঁঝ অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত চার দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম তিন গুণেরও বেশি বেড়ে এখন প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মধ্যবিত্তরা কাঁচা মরিচ কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। চাষিরা বলছেন, পরপর দুই দিন টানা ভারী বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতে পানি জমে মরিচ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ফলন কমায় দাম বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার শহরের বড়বাজার, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজার, রেলবাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকার ও মানভেদে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২শ টাকায়। কথা হয় চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বাজারে সবজি ব্যবসায়ী আসলাম হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, বাজারে কাঁচা মরিচের আমদানি অনেক কম। এর বড় কারণ হচ্ছে বৃষ্টি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে সবজিসহ কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে। এরজন্য আমাদের কিছুই করার নেই। একই কথা বলেন, ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম, তিনি বলেন, আমাদের জেলায় মরিচের আবাদ তেমন একটা হয় না। এসব মরিচ বেশির ভাগ উত্তরাঞ্চলের জেলা থেকে আসে। আর সামান্য কিছু যোগান দেয় জেলার চাষিরা। তবে বৃষ্টিপাতের কারণে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় অধিকাংশ এলাকায় মরিচের গাছ মরে গেছে। পাশাপাশি ফলনও কমেছে। এ কারণে বাজারে সরবরাহ কম হওয়ায় দামও আকাশছোঁয়া। তিনি বলেন, পাইকারি বাজারে আড়ৎদারা বেশি দামে মরিচ বিক্রি করার কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব বেশি পড়ছে। বৃষ্টি কমে গেলে দাম কমে যাবে। তবে ব্যবসায়ীদের এসব কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন বাজারে আসা ক্রেতারা। বৃহস্পতিবার সকালে যশোর বড় বাজারে আসা কয়েকজন ক্রেতা কাঁচা মরিজের দাম নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাক্ষাৎকারে বলেন, সংসারের অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম নিয়ে রীতিমত সিন্ডিকেট চলছে। তারা বলেন, বৃষ্টির অজুহাতে শুধু কাঁচা মরিচ নয়, বাজারে প্রতিটি সবজির দাম এখন অস্বাভাবিক। এমন কোনো সবজি নেই যে ৫০ টাকার নিচে কেজি বিক্রি হচ্ছে। সাইফুল ইসলাম নামে একজন ক্রেতা বলেন, সংসারের জন্য বাজার করতে এসে সিংহভাগ চলে যায় সবজি কিনতে। বাকি জিনিস কিনতে গেলে আর পকেটে কিছুই থাকে না। তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনো তদারকি নেই। যে কারণে প্রতিটি পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। মাত্র কয়েকদিন আগে এক হালি ডিম ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকা হালি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা দীপঙ্কর দাস বলেন, বৃষ্টির কারণে সবজিসহ কাঁচা মরিচের কিছু দাম বেড়েছে। ইতোমধ্যে বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সবজির দাম কমে যাবে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, যশোর জেলায় স্থানীয় জাতের পাশাপাশি তিন জাতের মরিচের চাষ হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে দুটি জাতের মরিচের ফলন আসতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে কৃষি বিপণন অধিদফতর যশোরের বাজার কর্মকর্তা মো. সুজাত হোসেন খান বলেন, সবজিসহ কাঁচা পণ্যের দাম কেনো বাড়ছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। এর পেছনে কারোর কারসাজি থাকলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে কোনো তদারকি নেই এমন অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা যশোরের বাজারগুলোতে প্রায়ই অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ক্রেতাদের সতর্ক করে থাকি। কোথাও অসঙ্গতি দেখা দিলে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনানুগ ব্যবস্থা নেন।