ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১২ তরুণী

0

বিশেষ প্রতিনিধি॥ ভারতে ছয়মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত কারাভোগ শেষে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যেমে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন দালালের মাধ্যমে ভারত যাওয়া ১২ তরুণী। তারা অবৈধপথে ভালো কাজ পাওয়ার আশায় ভারতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে। পরে তাদেরকে পরিবারের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার এবং বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি নামে দুটি এনজিও সংস্থার কাছে তাদের হস্তান্তর করা হয়। ১২ জনের মধ্যে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার ১১ জনকে এবং বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি একজনকে গ্রহণ করেছে। বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টায় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে তাদের হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা তরুণীরা হলেন, নরসিংদীর সুমি খাতুন (২৫), খুলনার আছমা খাতুন (২৫) ও নার্গিস খাতুন (২৪), ঝিনাইদহের নাজমা বেগম (২৩), নাটোরে মুক্তি খাতুন (২৪), যশোরের মাহফুজা খাতুন (২৩) ও শরিফা খাতুন (২৫), কুমিল্লার সেলিনা খাতুন (২৬), বরিশালের শায়লা পারভিন (২৪), ঢাকার মিতু বেগম (২৫) ও শিরিনা খাতুন (২৪) এবং সাতক্ষীরার সুইটি খাতুন (২৪)।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মাদ রাজু বলেন, ভারতে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে ১২ তরুণী দেশে ফিরেছেন। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেনাপোল পোর্ট থানায় তাদের হস্তান্তর করা হবে। সেখান থেকে দু’টি এনজিও তাদের নিয়ে যাবে। ফেরত আসা খুলনার আছমা খাতুন বলেন, ভালো কাজের আশায় দালালদের মাধ্যেমে তিন বছর আগে ভারতের হায়দ্রাবাদে যাই। সেখানে বাসা বাড়ির কাজ করার সময় সে দেশের পুলিশ আটক করে জেলে পাঠায়। পরে জেল থেকে ‘প্রজ্জলা’ নামে ভারতীয় একটি এনজিও ছাড়িয়ে এনে তাদের শেল্টার হোমে রাখে।
যশোর জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার শাওলী সুলতানা বলেন, ‘দেড় বছর আগে ভালো কাজের আশায় তারা দালালের মাধ্যমে ভারতের হায়দ্রাবাদ যায়। দালালরা তাদের কোনও কাজ না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় থানার পুলিশ গোপন খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে প্রোজ্বলা নামে একটি শেল্টার হোম তাদের ছাড়িয়ে নিজেদের হেফাজতে রাখে। তারা বাংলাদেশি কি-না যাচাই-বাছাই শেষে ভারত সরকারের দেওয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আজ তারা দেশে ফেরেন।’ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রোগ্রাম অফিসার রেখা বিশ্বাস বলেন, তারা বিভিন্ন সময়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে ভালো কাজের আশায় পাচার হয়। সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করার সময় পুলিশের হাতে আটক হয়। এরপর দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে দেশে ফেরত আসে। জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের সমন্বয়কারী রোকেয়া পারভিন বলেন, ফেরত আসাদের ইমিগ্রেশন ও থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে যশোর নিয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখা হবে। এরপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে হস্তান্তর করা হবে। তবে কেউ আইনি সহায়তা চায় দেওয়া হবে।