দুর্গাপূজা উপলক্ষে কলারোয়ায় চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ, ব্যস্ত শিল্পীরা

0

কে এম আনিছুর রহমান,কলারোয়া(সাতক্ষীরা) ॥ আগামী মাসে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ততা বেড়েছে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রতিমা শিল্পীদের। দিন রাত্রির পরিশ্রমে গড়া হবে দেবীর প্রতিমা। মুগ্ধ ভক্তরা আবার এই শিল্পীদের যাতে খোঁজেন, সুনাম হয়, দেবী প্রসন্ন হন সে আকাক্সক্ষা তাদের থাকে এ জন্যেও সর্বত্মক প্রচেষ্টায় ব্যস্ত থাকেন শিল্পীরা।
উপজেলার বিভিন্ন পূজাম-পে সকাল হতে গভীর রাত পর্যন্ত মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরি কাজে ভাস্কর শিল্পীরা। পৌরসদরের তুলসীডাঙ্গা ঘোষপাড়া মাতৃপূজা ম-পে প্রতিমা তৈরি করছেন সাতক্ষীরার এল্লারচরের প্রতিমা ভাস্কর সুভাষ পাল। তিনি জানান, এবছর ১২টি প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন তিনি। তিনি জানান, এই দেবী মূর্তি তৈরি আমার এখন একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান। সময়মতো তৈরি সম্পন্ন করতে হবে এ জন্যে দিনরত এখানেই কাটাচ্ছি। উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ রায় জানান, বর্তমানে মহামারী করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে শারদীয়া দুর্গাপূজা পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৬ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে আমন্ত্রণ ও ১০ অক্টোবর মহাপঞ্চমীর বোধন ঘট স্থাপন করে পূজা শুরু হবে। আর ১৫ অক্টোবর বিজয় দশমীর মাধ্যমে সমাপ্তী হবে। তিনি আরো জানান, কলারোয়া উপজেলায় এবার ৪২ টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা হবে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির ৩ জন কারিগর রয়েছেন। তারা হলেন তুলসীডাঙ্গা গ্রামের সঞ্জয় দাস, কাজীহাটের রবিন পাল ও যুগিবাড়ীর ষষ্ঠী পাল। আর বেশির ভাগ ভাস্কর বাইরের। তাদের মধ্যে রয়েছেন এল্লারচরের সুভাষ, ধূলিহারের নবদীপ ও অন্যান্যরা। প্রতিমা তৈরির কারিগর বা শিল্পীরা জানান, একটি প্রতিমা তৈরিতে শুরু থেকে সর্বশেষ পর্যন্ত আনুমানিক ১৫-২০ দিন সময় লাগে। প্রতিদিন আনুমানিক ১৪ থেকে ১৬ ঘন্টা কাজ করেন তারা। তারা আরো জানান, প্রকারভেদে প্রতিটি প্রতিমা তৈরিতে তারা মজুরি হিসেবে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। সম্পূর্ণ প্রতিমা তৈরিতে ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। প্রতিমা তৈরির শিল্পী সুভাষ পাল, সঞ্জয় দাস, রবিন পাল ষষ্ঠী পালসহ অন্যরা জানান, একটি প্রতিমা তৈরিতে বাঁশ, পেরেক ব্যবহার করে কাঠামো তৈরি করা হয়। তারপর কাঠামের সাথে খড় বা বিচালি দিয়ে পাটের রশি বা দড়ি দিয়ে বাঁধা হয়। পরে মাটি দিয়ে সংযুক্ত করে পাট, বালি ও মাটির সংমিশ্রণ করে বিভিন্ন রকম প্রতিমা মূর্তি তৈরি করা হয়। এগুলো করতে ধীরে ধীরে, শুকানোর জন্য সময় দিতে হয়। কিছু দিন পর মাটির তৈরি গহনা বা ইমিটেশান গহনা ব্যবহার করা হয়। শেষ পর্যায়ে বিভিন্ন রং এর সাহায্যে পরিপূর্ণরূপ দেওয়া হবে তৈরিকৃত প্রতিমার। সব মিলিয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এখন শুধু অপেক্ষা দুর্গা উৎসবের।