যশোরে ৪১টি গাছের মালিকানা নিয়ে চলছে বনবিভাগ ও জেলা পরিষদের টানাটানি

0

তহীদ মনি ॥ যশোরে রাস্তার পাশের অতি মূল্যবান ৪১টি গাছের মালিকানা নিয়ে টানাটানি চলছে বনবিভাগ ও জেলা পরিষদের মধ্যে। সর্বশেষ রাজারহাট রূপদিয়া এলাকার ৬টি মেহগনি গাছ কাটা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে এ দুই প্রতিষ্ঠান। আনুমানিক আড়াই লাখ টাকা দামের গাছগুলো গত মঙ্গল ও বুধবার বন বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে কেটেছে তাদের নির্ধারিত ঠিকাদার। খবর পেয়ে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সার্ভেয়ারসহ কর্মীরা যেয়ে সে গাছ তাৎক্ষণিকভাবে নিয়ে যাওয়া স্থগিত রেখেছে। জেলা পরিষদ গাছগুলোকে তাদের দাবি করলেও বিভাগীয় বনকর্মকর্তার দাবি শুধু ৬টি নয়, মোট ৪১টি গাছ নিয়ে বেশ কিছুদিন বনবিভাগ ও জেলা পরিষদের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে।
জেলাপরিষদ ও বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, রূপদিয়া নিমতলী সড়কের ট্যাকেরহাট বাজার সংলগ্ন এলাকার ৩০-৪০ বছরের ৬টি মেহগনি গাছ বনবিভাগের ঠিকাদারের মাধ্যমে কেটে নিয়ে যাচ্ছে মর্মে গতকাল খবর পান জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিষয়টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলকে অবহিত করা হয়। এসময় তার নির্দেশে পরিষদের সার্ভেয়ারসহ বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে যান এবং গাছ নিয়ে যাওয়া কাজে বাধা দেন। পরে উভয়পক্ষের আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আপাতত কাটা গাছগুলো রাজারহাট রেলক্রসিং এলাকায় সামাজিক বনবিভাগের স্থানীয় সমিতির সভাপতির জিম্মায় রাখার সিদ্ধান্ত হয় এবং আগামীতে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ-উজ-জামান জানান, ৬টি নয়, মোট ৪১টি গাছ জেলা পরিষদ নিজেদের দাবি করছে। গাছগুলো সামাজিক বনায়নের আওতায় রোপণ করা। তিনি গাছগুলোর মূল্য জানাতে না পারলেও তার দাবি ২২-২৫ বছর বয়সের গাছ ওগুলো। সরকারের নির্দেশে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় গাছগুলো লাগানো। গাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থের ৫৫ শতাংশ উপকারভোগী, ১০ শতাংশ বনবিভাগ, ২০ শতাংশ জেলা পরিষদ, ১০ শতাংশ পুনঃবনায়ন প্রক্রিয়ার জন্যে এবং ৫ শতাংশ অর্থ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পাবে। সে অনুসারে গাছ বিক্রির জন্যে কয়েকটি লটে টেন্ডার করা হয়েছে। কিন্তু এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে পুরো মালিকানা দাবি করছে জেলা পরিষদ।
জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার মো. আল আমিন ঘটনাস্থল থেকে জানান, টেন্ডার, কী দাম ধরা হয়েছে তা আলাদাভাবে এই ৬টি গাছের ক্ষেত্রে বলা সম্ভব নয়। তবে প্রতি গাছ আনুমানিক ৪০-৪২ হাজার টাকা হবে। এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, বনবিভাগ সামাজিক বনায়নের আওতায় ১০-১২ বছর গাছ লাগিয়ে তাদের ছোট গাছের পরিবর্তে জেলা পরিষদের ৩০-৪০ বছর বয়সী বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি গত দুদিনে যে ৬টি গাছ কাটা হয়েছে তা নিজেদের দাবি করে বলেন, বনবিভাগ অযৌক্তিকভাবে গাছগুলো তাদের না জানিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে।